অভিযুক্ত ধর্ষক শিক্ষক আল মামুনকে জেলহাজতে প্রেরণ

জীবননগর কুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের মামলা

জীবননগর ব্যুরো: ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার একমাত্র এজাহারভুক্ত আসামি জীবননগর উপজেলার কুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আল-মামুনের জামিন আবেদন নাকচ করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার জীবননগর আমলী আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজেদুর রহমান এ আদেশ প্রদান করেন বলে জানা গেছে।

অভিযোগে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার কুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আল-মামুন (৪৫) মোক্তারপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিয়ে প্রাইভেট বাণিজ্য চালিয়ে আসছিলেন। করোনা সংক্রমণে দেশব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ ঘোষণা করলে তার প্রাইভেট বাণিজ্যে ধ্বস নামে। সে সময় শিক্ষক আল মামুন অত্যন্ত গোপনে তার গ্রামের মিনাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিপড়–য়া ছাত্রী ও তারই ছোট বোন ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন। এরই মাঝে হঠাৎ শিক্ষকের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র বেড়াতে গেলে সুযোগ বুঝে ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে ভাত খাওয়ার জন্য ডিম ভাজতে বলে। ওই ছাত্রী শিক্ষকের রান্না ঘরে ঢুকে ডিম ভাজার কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগে স্কুল শিক্ষক আল-মামুন ঘরে ঢুকে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। গত ২৪ এপ্রিল এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী বাড়িতে ফিরে তার মায়ের কাছে ঘটনাটি প্রকাশ করে। বিষয়টি প্রতিবেশীদের মধ্যে জানাজানি হলে অভিযুক্ত ধর্ষক শিক্ষক প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় ছাত্রীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় ধর্ষিতার পরিবার সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের স্মরণাপন্ন হয়েও বিচার না পেয়ে অবশেষে গত ৯ আগস্ট জীবননগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। জীবননগর থানা ধর্ষিতার ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য চুয়াডাঙ্গায় প্রেরণ করে। এ মামলা দায়েরের পর প্রভাবশালী শিক্ষক আল মামুন গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দেন। গতকাল তিনি চুয়াডাঙ্গার জীবননগর আমলী আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাড. আব্দুস সামাদ। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাড. নাসির উদ্দিন।

উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই দৈনিক মাথাভাঙ্গায় ‘জীবননগর কুলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আল মামুনের কান্ড, ছাত্রীর সাথে অপকর্ম করে এবারও কী খুঁটির জোরে পার পেয়ে যাবেন’ ও ১১ আগস্ট ‘অবশেষে ধর্ষক শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা’ শিরোনামে দুটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

 

Comments (0)
Add Comment