নদীতে ভাসছে মাহির লাশ : পাড়ে অন্তঃসত্ত্বা মা ও নানির আহাজারি

মেহেরপুরের আমঝুপি নানাবাড়ি বেড়াতে এসে কাজলা নদীতে ডুবে শিশুকন্যার মৃত্যু

মেহেরপুর অফিস: কাজলা নদীতে ভাসছে বোবা (বাক প্রতিবন্ধী) নাতির মরদেহ, পাড়ে দাঁড়িয়ে সে দৃশ্য দেখে অঝোরে কাঁদছেন নানি। সন্তান হারানোর বেদনায় আহাজারি করছেন অন্তঃসত্ত্বা মা। মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামে হৃদয়বিদারক এ দৃশ্য দেখা গেছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে নানা বাড়ির পাশের কাজলা নদীতে গোসল করতে গিয়ে অবৈধ মাছের অভয়ারণ্যে পুতে রাখা তালপাতায় আটকে পানিতে ডুবে মাইশা ওরফে মাহির (৮) মৃত্যু হয়েছে। সে শেরপুর জেলা শহরের মঞ্জুরুল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, মাহির বাবা মনজুর রহমান ঢাকায় একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টারিতে চাকরি করেন। মাহির সন্তান সম্ভাব্য মা শিরিনা খাতুন ২য় সন্তান প্রসবের জন্য আমঝুপি পশ্চিমপাড়ায় বাবা রেজাউল হকের বাড়িতে আসেন। বেলা ১১টার দিকে মাহি তার মামাতো বোনের সাথে আমঝুপির কাজলা নদীতে গোসল করতে যায়। নদীর মাঝামাঝি স্থানে স্থানীয়ভাবে তৈরি তালপাতা ঘেরা মাছের অভয়ারণ্যে আটকে যায় মাহি। পরে মাহির মামাতো বোন অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে বাড়ির লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়দের সাথে নিয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে তালপাতার নিচ থেকে অচেতন অবস্থায় মাহিকে উদ্ধার করে। এসময় তাকে দ্রুত মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মাহির মা শিউলী খাতুন জানান, শিউলী তার ছেলে মাহিকে নিয়ে আমঝুপি পশ্চিমপাড়ায় বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। রোববার সকালে মাহি তার মামাতো বোন রিয়া খাতুনের সাথে পাশের নদীতে গোসল করতে যায়। এসময় নদীতে অবৈধভাবে পেতে রাখা কারেন্ট জালে তার মাথা আটকে যায়।

শিশুর নানা রেজাউল হক জানান, মাহির মা শিউলী খাতুন দ্বিতীয় সন্তান জন্ম দিতে তাদের (বাবা) বাড়িতে এসেছেন। শিশুটির বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার কর্মী।

মেহেরপুর সদর থানার ওসি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত শিশুর মরদেহ হাসপাতাল থেকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Comments (0)
Add Comment