তিন ম্যাচে ৫ গোল করেছেন ঋতুপর্ণা চাকমা। বাহরাইন, মিয়ানমার এবং তুর্কেমেনিস্তানের বিপক্ষে ছিলেন দাপুটে ফর্মে। গোল করেছেন, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন। বাংলাদেশকে গড়ে দিয়েছেন ইতিহাস। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের মূলপর্বে সুযোগ পেয়ে ঋতু বললেন, আরও বিশ্বাস রাখতে। তাদের এখনও অনেক কিছু দেওয়ার বাকি।
রোববার মধ্যরাতে হাতিরঝিলে বসেছিল মেয়েদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। ইতিহাস গড়া নারীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানেই ঋতুপর্ণা বলেন, তাদের লক্ষ্য শুধু এশিয়ায় আটকে নেই। বিশ্ব ফুটবলেও বাংলাদেশের পতাকা ওড়াতে চান তারা।
দলের গোলমেশিন ঋতুপর্ণা চাকমা বলেন, ‘প্রথমেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি দর্শকবৃন্দকে। এত রাতে আমাদের বরণ করে নেওয়ার জন্য। আজকে আমরা এখানে এসেছি দলীয় প্রচেষ্ঠায়। ফুটবল কোনো ব্যক্তিগত নৈপূন্যনির্ভর খেলা নয়। আমরা বাংলাদেশের মেয়েরা জানি কঠিন পরিস্থিতিতে কিভাবে ফাইট করতে হয়। আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখবেন, আমরা আপনাদের নিরাশ করব না। আমরা এশিয়া নয়, বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে চাই।’
রবিবার দিবাগত রাত প্রায় ২টার দিকে আফিদা-ঋতুপর্ণারা মিয়ানমার থেকে থাইল্যান্ড হয়ে ঢাকায় পৌঁছান। সেখান থেকে সরাসরি হাতিরঝিলে। রাত ৩টা ১৫ মিনিটে তারা সংবর্ধনাস্থলে পৌঁছালে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্যরা ফুলের তোড়া দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
এসময় দলের অধিনায়ক অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার বলেন, ‘আমাদের এই সাফল্য একদিনে আসেনি। খুবই ভালো লাগছে। এই মুহূর্ত কখনো ভোলার মতো নয়। সকলে আমাদের জন্য দোয়া করবেন আমরা যেন আরও ভালো কিছু করতে পারি। শুধু দক্ষিণ এশিয়া ও এশিয়া নয়, আমরা যেন বিশ্বমঞ্চে দেশকে আরও অনেক দূর নিয়ে যেতে পারি।’
ইতিহাস গড়া সাফল্যের পেছনে মেয়েদের কৃতিত্ব দিয়েছেন কোচ পিটার বাটলার, ‘কঠিন একটা সপ্তাহ ছিল এবং আমি বলব সম্ভবত এটা স্রেফ কঠিন একটা সপ্তাহ ছিল না। কিন্তু তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সবশেষ ৯ থেকে ১২ সপ্তাহ আমাদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। গত বছর থেকে যেটা শুরু হয়েছিল, আমাদের ওঠা-নামার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। টালমাটাল সময় ছিল। তবে এই মেয়েদের ছাড়া আজ আমরা এখানে থাকতে পারতাম না। মেয়েরা যা করেছে, সে জন্য তাদের ধন্যবাদ। টিম স্টাফসহ সবাইকে ধন্যবাদ।’
মধ্যরাতে ঐতিহাসিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক, উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল, দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার , ফরোয়ার্ড ঋতুপর্ণা চাকমা এবং কোচ পিটার বাটলার। বক্তারা নারী ফুটবলারদের এই অভাবনীয় সাফল্যে দেশের মানুষের গর্ব ও উচ্ছ্বাসের কথা তুলে ধরেন।