বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনে বোর্ডের প্রভাবশালী পরিচালক মাহবুবুল আনাম অংশ নেবেন না, আগেই জানিয়েছেন। সেই পথে হাঁটলেন এবার আকরাম খান। যুগান্তরকে সাবেক এই অধিনায়ক জানালেন, তিনিও আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। আকরাম খানের নির্বাচনে না যাওয়ার পেছনে বড় কারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে তার ভাতিজা তামিম ইকবালের ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, ‘আমি এবার নির্বাচন করছি না। তামিম এরই মধ্যে নির্বাচন করতে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়েছে। সে আমার পরবর্তী প্রজন্ম। একই পরিবার থেকে একজনের বেশি বোর্ডে থাকা উচিত নয়। আমি সব সময় বিতর্কের বাইরে থেকেছি। সেভাবেই থাকতে চাই।’
চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে দুজন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবার বিসিবিতে আসতে পারেন। তাদের একজন তামিম। বিসিবির এবারের নির্বাচনে সংগঠকদের বাইরেও রাজনৈতিক প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। বেশির ভাগ জেলা ও বিভাগ থেকেই রাজনৈতিক পরিচয়ের ব্যক্তিদের পরিচালক পদে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এরই মধ্যে বিএনপি একটি তালিকা করেছে। এদিকে, গত পরশু খুলনায় এক অনুষ্ঠানে বিসিবির সাবেক সভাপতি আলী আসগর লবি বলেছেন, ‘তামিম বিএনপির প্রার্থী এবং আমিনুল সরকারের।’
এদিকে ক্রিকেটার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (কোয়াব) নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল তামিম ইকবালের। কোয়াবের সভাপতি এবং পরে বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হলে সভাপতি হওয়ার পথ প্রশস্ত করতে যে কোনো একটি পদ ছাড়তে হতো তামিমকে। সাবেক এই বাঁ-হাতি ড্যাশিং ওপেনার ও অধিনায়ক ঠাওরেঠুরে বুঝিয়ে দিলেন, কেন কোয়াবে নির্বাচন করেননি তিনি। তার পরিকল্পনা দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট। কোয়াবে তামিমের প্রার্থী মোহাম্মদ মিঠুন বড় ব্যবধানে জয়ী হয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সেই অর্থে জয়ী হয়েছেন তামিমই। কাল মিরপুর স্টেডিয়ামে একাডেমি ভবনে তামিম সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। তামিম বলেন, ‘সবাই জানেন আমি কেন কোয়াবের নির্বাচনে আসিনি। আশা করি, আপনারা বুঝতে পারবেন।’ ইঙ্গিতটা বিসিবি সভাপতি প্রার্থিতার দিকে। এর মধ্য দিয়ে ক্রিকেট প্রশাসক হওয়ার দৌড় শুরু করে দিলেন তিনি।
তামিম যোগ করেন, ‘যদি ক্রিকেট বোর্ড খেলোয়াড়দের দেখভাল করে, তাদের টাকাপয়সা, সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে, তাহলে তো কোয়াবের কোনো কাজই থাকবে না। সব পেয়ে গেলে কী নিয়ে অভিযোগ করবে ক্রিকেটাররা?’ তার ধারণা, যেসব ক্রিকেটার এখনো খেলছেন তাদেরই কোয়াবের সভাপতি হওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘ধরুন এই ধরনের সংগঠনের ৯৫ শতাংশ কাজ সক্রিয় ক্রিকেটারদের নিয়ে। সাবেক ক্রিকেটাররাও অবশ্যই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমানের কেউ সভাপতি হলে ভালো হয়।’
তার মানে, এ-কূল ও-কূল দুই কূল ঠিক রেখে ক্রিকেট-প্রশাসক হওয়ার পথে বেরিয়ে পড়েছেন এই সাবেক মারকুটে ব্যাটার। শুরু হয়ে গেল তার ‘দ্বিতীয় ইনিংস’।