আবারও শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস : এবার অকালে বিদায় নেবে শীত

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড চুয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
স্টাফ রিপোর্টার: বাংলা বর্ষপঞ্জিতে এখন মাঘ মাস। শীতের পরিপূর্ণ মাহাত্ম্য দেখানোর মাস। কিন্তু প্রথম এক সপ্তাহ শীতের দাপট দেখিয়ে মাঘ মাস যেন প্রকৃতির সাথে লুকোচুরি খেলছে। গত মঙ্গলবার ছিটেফোঁটা বৃষ্টি। গতকাল বুধবার ভোররাত থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় পুরো দেশ। সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা ও চুয়াডাঙ্গায় সামান্য বৃষ্টি হয়। এর সঙ্গে ছিলো হিমেল বাতাস, আকাশে ছিলো মেঘও। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই মেঘ আর কুয়াশা কেটে যেতে থাকে। বৃহস্পতিবার সকালে মেঘের আড়ালে নীলাকাশে হাসি দিয়ে ওঠে রোদ। রোদ ছিলো সারাদিন। ফলে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল কিছুটা উষ্ণই ছিলো। তবে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে আবারও শীতের অনুভূতিও কিছুটা বাড়ে। তাপমাত্রা আরও কমে আজ শুক্রবারের মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ফের শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মাঘের পরবর্তী দিনগুলোতে কনকনে আমেজ পাওয়া গেলেও তা স্থায়ী হবে না। দিন যতো যাবে, শীত সরিয়ে গরমের মাত্রা বাড়তে থাকবে। এবার মাঘ মাসের মাঝামাঝিতেই শীতের বিদায় ঘটতে পারে। উত্তর জনপদে পৌষের শেষ ও মাঘের শুরুতে সপ্তাহখানেক টানা শৈত্যপ্রবাহ ছিলো। গত ১৫ জানুয়ারি নওগাঁর বদলগাছীতে তাপমাত্রা নেমে যায় ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা চলতি মরসুমের সর্বনিম্ন। সেই শৈত্যপ্রবাহ বিদায় নেয় তিন দিন আগে। বুধবারের বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও তা ১০ ডিগ্রির নিচে নামেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো সীতাকু-ে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলে। আর তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে বলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। শুক্রবার থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু কিছু জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে বলে বৃহস্পতিবার জানান আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, রোদের পর মেঘ কেটে গেছে। শুক্রবার থেকে আবার শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। পরবর্তী সময়ে তা দেশের অন্যান্য অংশে বিস্তার করতে পারে। শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া সম্ভাব্য শৈত্যপ্রবাহ তীব্র মাত্রায় রূপ নিতে পারে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি জানান, এটি মৃদু থেকে মাঝারি হতে পারে। তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে। আবার কোথাও কেথাও ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে। তিনি বলেন, আজ থেকে শুরু হওয়া সম্ভাব্য শৈত্যপ্রবাহ দুই থেকে তিন দিন স্থায়ী হতে পারে। তারপর তাপমাত্রা আবার বেড়ে তা এক থেকে দুদিন স্থায়ী হতে পারে। আবার জানুয়ারির শেষে তাপমাত্রা কমতে পারে। এরপর শীত বিদায় নিতে পারে। শীত মরসুম এবার সংক্ষিপ্ত কিনা-এ বিষয়ে তিনি বলেন, এবার আগে আগেই শীত বিদায় নিতে পারে। কারণ, দীর্ঘতর বর্ষাকালের পর শীতকাল সংক্ষিপ্ত হয়। সাধারণত বর্ষাকাল অক্টোবরের মাঝামাঝিতে শেষ হয়। কিন্তু গত বছর সাগরে লঘুচাপের কারণে বর্ষাকাল শেষ হতে অক্টোবর লেগে যায়। ফলে শীত কিছুটা আগেই শেষ হচ্ছে।

Comments (0)
Add Comment