ইবি ছাত্রদলের সাবেক নেতার বিরুদ্ধে নারী হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাশেদের বিরুদ্ধে এক নারী হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। আর্থিক বিষয়কে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হয়ে ২৫ দিন পর রোববার (৪ জুলাই) রাতে আয়শা সিদ্দিকা ঝড়া (৩০) নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়। গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে তার নিজ গ্রাম ইবি ক্যাম্পাসস্থ পদমদীতে দাফন করা হয়। গত ১১ জুন এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গত ২১ জুন ভুক্তভোগীর মা লিপি খাতুন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ সহ এজাহার দাখিল করেন। এতে হামলায় জড়িত সন্দেহে ইবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ও ইবি কর্মচারী বিপুল আহমেদসহ আরও তিনজনের নাম উল্লেখ করেন তিনি। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, কুষ্টিয়ার হাউজিং ডি ব্লকে ৪৫৬ নং ভবনের ভাড়াটিয়া বাসিন্দা মামলার এজাহারকারী লিপি খাতুন। তিনি ওই বাসাতে তার বিধবা কন্যা আয়শা সিদ্দিকা ঝড়াকে নিয়ে বসবাস করতেন। ইবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ ঝড়ার কাছ থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেখান থেকে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে বাকি এক লাখ টাকা পরিশোধের জন্য ঝড়াকে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন সংলগ্ন পুাক ফুড পার্কে ডেকে নেন। কিন্তু উপস্থিত হওয়ার পর টাকা দিতে অস্বীকার করলে ঝড়া ও তার মা বাড়ি ফিরে যান। বাড়িতে প্রবেশের আগ মুহূর্তে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা কয়েকজন ঝড়ার ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা করেন। ঝড়ার মা লিপি খাতুনের চিৎকার শুনে সেখানে থাকা উপস্থিত লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় ঝড়াকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন। পেছন দিক থেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার দুই পায়ের লিগামেন্টসহ রক্তনালী বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এজন্য উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ওইদিন রাতেই ঝড়াকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ১৫ জুন থেকে ঢাকাস্থ পঙ্গু হাসপাতালে ডা. নাজিম উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন ঝড়া। শেূষ পর্যন্ত তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। রোববার রাত সাড়ে ১২টায় চিকিৎসাধীন আয়শা সিদ্দিকা ঝড়ার করোনায় মৃত্যু হয় বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিশ্চিত করেন। অভিযোগের বিষয়ে রাশেদুল ইসলাম রাশেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ওপর আনা অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এর কোনো সত্যতা নেই। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে একটি পক্ষ আমার বিরূদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে।’
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক তাপস কুমার পাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। কিছু প্রাসঙ্গিক আলামতসহ ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা চলছে। আশা করি, খুব শিগগিরই জড়িদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পারবো।’

Comments (0)
Add Comment