জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে খুলনায় আলোচনা সভায় দুদু

সরকার না পারলে আমরাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দেব

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘আমাদের নেতা রাষ্ট্রের, সরকারের, বিএনপির এবং দেশের মানুষের জন্য স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে, যদি আপনারা তারিখ ঘোষণা করতে না পারেন, আমরাই তারিখ ঘোষণা করে দেব।’ গতকাল বৃহস্পতিবার খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে ‘গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত এই আলোচনা সভা হয়। দুদু বলেন, আপনাদের যারা কর্মচারী-এখানের পুলিশ, প্রশাসন যারা দেশের মানুষের অর্থে চলে; আর সেখানে আপনি যদি নববধূর মতো আচরণ করেন, তাহলে আমরা কী করব। আমাদের তো একটা ডেট দরকার; দরকার না? এখন পাত্রী আমরা দেখতে গেছি, পছন্দ হয়েছে। একটা দিন বলতে হবে না? দিন না বললে তো আমরা কাউকে দাওয়াত দিতে পারব না। দিন বলবেন না, দাওয়াত দিয়ে কী হবে! ‘তারেক রহমান চূড়ান্ত কথা বলেননি। যখন সারাদেশ স্থবির হয়ে যাবে, সেদিন বুঝবেন।’
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, যদি বিএনপি ১৭ বছর আন্দোলনে না থাকত, এক মাসের আন্দোলনে হাসিনার পতন হতো না। আমরা যে আন্দোলন নিয়ে গর্ব করি, সেই ২৪-এর আন্দোলনকে যারা ছোট করছে; হাজার হাজার ছোট ভাইবোনকে সহযোগিতার জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান সেখানে পাঠিয়েছেন। বিএনপি বলেছে, আগামীতে যদি রাষ্ট্রক্ষমতায় যায়; আহত-নিহত পরিবারের দায়িত্ব নেবে বিএনপি। আপনারা ইতিহাস পড়েন। না হলে কিভাবে এক মাসের অর্জন ছোট করছেন?
সরকারের সমালোচনা করে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ড. ইউনূস সংস্কারের কথা বলছেন, আগে তো তার সংস্কার হওয়া উচিত। উচ্চ আদালতে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর নির্দেশ দিলেও তিনি ও তার উপদেষ্টা তা হতে দেননি। হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করেছেন। পদত্যাগ নাটক করেছেন। হাসিনার মতো বিনিয়োগ সম্মেলনের নামে ৫ কোটি বিনিয়োগ করেছেন। তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন মহান নেতা। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে অপেক্ষমাণ জাতির প্রত্যাশা পূরণ করেছিলেন। তার রাষ্ট্রক্ষমতাকালীন সাড়ে ৩ বছরে একটি পয়সারও দুর্নীতি নেই। আগামী দেড়শ বছরেও তার কোনো দুর্নীতি খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি এমন রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন, যার মৃত্যুর পর একটি প্লট, ব্যাংক ব্যালেন্স বা সম্পদ ছিল না। তিনি জাতিকে ‘বাংলাদেশি’ একাতবদ্ধ করেছিলেন। কৃষকদলের সাবেক এ আহ্বায়ক বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ উচ্চারণ করেছেন। আর ড. ইউনূস সরাব আগে গ্রামীণ ব্যাংক, সবার আগে টাকা দেব না, ছয় মাসের সবার আগে বিদেশে লোক পাঠাব-লাইসেন্স নেব বলছেন। তিনি রাষ্ট্রের আমন্ত্রণে কোথাও যাননি, ব্যবসার কাজে গেছেন। সাম্য হত্যা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা গুপ্ত সংগঠন চালিয়েছে উল্লেখ করে তিনি দ্রুত তাদের গ্রেফতারের দাবি জানান। তিনি বলেন, জামায়াত ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সেখানে তাদের স্ত্রীরা ভোট দিলে তা ধানের শীষে যাবে। তাই নারীসহ মানুষের অধিকার আদায়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। খুলনা মহানগর বিএনপি সভাপতি অ্যাড. এস.এম. শফিকুল আলম মনা সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবি, খুলনা জেলা বিএনপি আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান মন্টু, খুলনা মহানগর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল আলম তুহিন, খুলনা জেলা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাড. মোমরেজুল ইসলামসহ আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।