ডেঙ্গু রোগী ১০ হাজার ছাড়ালো

স্টাফ রিপোর্টার: এইডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে নতুন করে আরও ২৩৩জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন, যা নিয়ে চলতি বছর রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ৯০ জনে দাঁড়ালো। এ বছর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে আসা ডেঙ্গু রোগীদের ৮ হাজার ৮৯৫ জন সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন, মারা গেছেন ৪২ জন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে জানা গেছে। হাসপাতালে ভর্তি মোট ১০ হাজার ৯০ জন রোগীর মধ্যে চলতি মাসেই শনাক্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৩২ জন। আর আগস্টে মারা গেছেন ৩০ জন ডেঙ্গু রোগী। গত একদিনে নতুন করে কোনো ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর তথ্য দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে রোগী কিছুটা কমে ২৩৩ জনে নেমেছে। আগেরদিন রোববার ২৫২ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য এসেছিলো। গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে নতুন আক্রান্ত হওয়া ২৩৩ জনের ২১৩ জনই ঢাকার বাসিন্দা। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এক হাজার ১৫০ জন ডেঙ্গু রোগী, যাদের ১ হাজার ৪ জনই ঢাকা মহানগরীর। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ-বিসিএসআইআর ডেঙ্গু ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছে। গত রোববার সেই তথ্য প্রকাশ করে সংস্থাটি জানায়, ঢাকায় ডেঙ্গু ভাইরাসের ‘ডেনভি-৩’ ধরনে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এবং দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে মৃত্যুও বেশি হচ্ছে।
বিসিএসআইআরের গবেষণাগারে ২০ জন ডেঙ্গু রোগীর নমুনা থেকে ভাইরাসের জিনবিন্যাস বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তারা সবাই ডেঙ্গু ভাইরাসের ডেনভি-৩ ধরনে আক্রান্ত ছিলেন। বিসিএসআইআর এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক আফতাব আলী বলেন, ‘ডেঙ্গুর মিউটেশন সংক্রান্ত তেমন গবেষণা না থাকায় এসব মিউটেশনে ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাব শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।’ এ গবেষণার জন্য রাজধানীর শুধুমাত্র একটি হাসপাতাল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে ডেঙ্গুর বিস্তৃতি জানার জন্য আরও অধিক সংখ্যক জিনোম সিকোয়েন্সিং করা প্রয়োজন।’ ডেঙ্গু ভাইরাসের জীবন রহস্য উন্মোচনের ফলে সহজে এর চিকিৎসা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মহামারীর মধ্যে এবার এ মরসুমে জুলাই থেকে উদ্বেগ বাড়াতে থাকে ডেঙ্গু। গত মাসে ২ হাজার ২৮৬ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন, মৃত্যু হয় ১২ জনের। অগাস্ট মাসে ডেঙ্গু রোগী দ্রুত বাড়তে থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে সেই সংখ্যা কমে আসছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করায় এক লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরের বছর তা অনেকটা কমে আসায় হাসপাতালগুলো এক হাজার ৪০৫ জন ডেঙ্গু রোগী পেয়েছিলো।

Comments (0)
Add Comment