থানায় যুবকের ঝুলন্ত লাশ: ওসিসহ চার পুলিশ প্রত্যাহার

কক্সবাজারের চকরিয়া থানা হাজতে দুর্জয় চৌধুরী (২৭) নামে এক যুবকের আত্মহত্যার ঘটনায় ওই থানার ওসি শফিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হানিফ মিয়া ও দুই কনস্টেবলকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

শনিবার (২৩ আগস্ট) রাতে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মো. সাইফউদ্দীন শাহীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিনকে প্রধান করে চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ ও কোর্ট ইন্সপেক্টর আনোয়ার উল ইসলামকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে রোববার দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক-১ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খানমকে ওএসডি করা হয়েছে।

এক অফিস আদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালককে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে সরেজমিন তদন্তপূর্বক সুস্পষ্ট মতামত ও প্রমাণসহ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে দুর্জয় চৌধুরীর প্যান্টের পকেটে দুইটি চিরকুট পাওয়া গেছে বলে সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ নিশ্চিত করেছেন। তবে কর্তৃপক্ষের কেউ চিরকুটের বিষয় খোলাসা করেননি।

উল্লেখ্য, চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী দুর্জয় চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২ লাখ ৮৩ হাজার সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে ২১ আগস্ট রাতে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করে থানা হাজতের একটি আলাদা কক্ষে রাখা হয়েছিল। ওই রাতে সেখানে দুর্জয় আত্মহত্যা করেছেন মর্মে দাবি করে পুলিশ।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই রাত ১২টা ৪২ মিনিট থেকে ১টা ২২ মিনিট পর্যন্ত সময়ে দুর্জয় ৪ বার গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তবে ১টা ২২ মিনিটের পরে তিনি সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে চলে যান।

অন্যদিকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করছেন দুর্জয়ের স্বজনরা। এ অভিযোগ নিয়ে একই দিন শুক্রবার বিকালে চকরিয়া কেন্দ্রীয় কালীমন্দির দুর্গাপূজা কমিটির আয়োজনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।