দেশে এক দিনে করোনায় ৫০ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৩৩১৯

দেশে আজ (১৫ জুন) মঙ্গলবার সকাল আটটা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৩১৯ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, যা গত ৫৩ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। ওই ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর চেয়ে বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল গত ২৩ এপ্রিল। সেদিন ৩ হাজার ৬২৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ৮ লাখ ৩৩ হাজার ২৯১। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ২২২ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৭১ হাজার ৭৩ জন। ওই ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ১৫ জন করে মৃত্যু হয়েছে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে মৃত্যু হয়েছে ছয়জন করে। এ ছাড়া সিলেট ও ময়মনসিংহে তিনজন করে এবং বরিশাল ও রংপুরে একজন করে মারা গেছেন করোনায়। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল আটটা থেকে সোমবার সকাল আটটা) করোনাভাইরাস সংক্রমিত ৫৪ জনের মৃত্যু হয়। আর করোনা শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৫০ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গতকাল সোমবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ হাজার ২৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। এটি গতকালের তুলনায় কিছুটা কম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে।
এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ আবার বেড়ে যায়। মার্চের প্রথমার্ধেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের ওপরে চলে যায়। বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৬ মার্চের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়, সেখানে ১৯ এপ্রিলের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ওই দিনই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়।
করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা এখনো বহাল। এ বিধিনিষেধে মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে গত মাসের মাঝামাঝিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ‘লকডাউন’ ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে। ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা ও যাতায়াতে বিপুল লোকসমাগম দেখে জনস্বাস্থ্যবিদেরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আশঙ্কা করেছিল, ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে। এদিকে ভারত সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়ছে। কিছুদিন ধরে সারা দেশেও করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে।

Comments (0)
Add Comment