দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী : আরও ১৩ জনের মৃত্যু

টানা তৃতীয় দিনের মতো হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত

স্টাফ রিপোর্টার: দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। টানা তৃতীয় দিনের মতো হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে এক হাজার ৬৬ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে পাঁচ লাখ ৫৫ হাজার ২২২ জন। অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ। দৈনিক শনাক্তের হার সর্বশেষ এর চেয়ে বেশি ছিলো ৫ জানুয়ারি। সেদিন পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ছিলো ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এরপর কমতে কমতে তা ৩ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে মার্চের শুরু থেকে সংক্রমণ বাড়তে থাকে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা আট হাজার ৫১৫ জন। ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৮টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৯টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৭২টি র্যােপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট ২১৯টি ল্যাবে ১৬ হাজার ১১১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪২ লাখ ৩২ হাজার ১৩৯টি নমুনা। এই সময়ে নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ১২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ-স্বাচিপ সভাপতি অধাপক ডা. এমএ আজিজ বলেন, দুমাস ধরে করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সম্প্রতি সেটি বাড়তে শুরু করেছে। অধিদপ্তর কিছুটা উদ্যোগ নিয়েছে। তবে আমি মনে করি, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আবারও কিছুটা কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ, দেশের সব শ্রেণির জনসাধারণের মধ্যে স্বাস্থবিধি মানার প্রতি শিথিলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যেতে পারে। রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান এবং সব ধরনের যানবাহনে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিধান করতে হবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে সরকারের নতুন করে ভাবতে হবে। তা ছাড়া দৈনিক দশ লাখ টিকাদানের সক্ষমতা থাকলেও প্রতিদিনই টিকাদানের পরিমাণ কমছে। এ অবস্থায় দ্রুততার সঙ্গে টিকাদান বাড়াতে হবে এবং ন্যূনতম বয়সের ক্ষেত্রে ৪০ বছরের বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দিতে হবে। কারণ, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি মানুষের বয়স ৪০ বছরের নিচে।

দেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মার্চ তা সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন একদিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা ছিল একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

Comments (0)
Add Comment