দেশে করোনায় আরও ৫২ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত একদিনে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত ৮৪ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে সর্বশেষ গত ১৫ জুন এর চেয়ে কম মৃত্যুর খবর এসেছিলো। সেদিন ৫০ জন মারা যান। গত এক দিনে মারা যাওয়া ৫২ জনকে নিয়ে দেশে করোনা ভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে হলো ২৬ হাজার ৭৩৬। বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২ হাজার ৪৯৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৫ লাখ ২২ হাজার ৩০২। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতর আগের ২৪ ঘণ্টায় মোট ২ হাজার ৬৩৯ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল, মৃত্যু হয়েছিলো ৫৬ জনের। সেই হিসাবে গত এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আর মৃত্যু দুটোই কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ০৭ শতাংশ, যা আগের দিন ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ ছিলো। গত একদিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ১ হাজার ৫৩৪ জনের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি। একদিনে মৃত্যুর এই তালিকায় আগের দিনের মতো বুধবারও নারী আর পুরুষের সংখ্যা বড় ব্যবধান দেখা যাচ্ছে। মারা যাওয়া ৫২ জনের মধ্যে ৩২ জনই নারী, বাকি ২০ জন পুরুষ। আগের দিন মারা যাওয়া ৫৬ জনের মধ্যে ৩৭ জন নারী এবং ১৯ জন পুরুষ ছিলেন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৬৫ শতাংশই পুরুষ। কিন্তু ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট বিস্তারের পর আগস্ট মাস থেকে নারীর মৃত্যুহার বেড়ে গেছে। এখন মাঝেমধ্যেই দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় নারীর সংখ্যা পুরুষের চেয়ে বেশি থাকছে। সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ৩ হাজার ৮৪০ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৯৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত একদিনে সারাদেশে মোট ২৭ হাজার ৫২৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৭১টি নমুনা। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ; মৃত্যুহার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। গত একদিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২০ জন ঢাকা বিভাগের, ১৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন রাজশাহী বিভাগের, ৯ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন বরিশাল বিভাগের, ৩ জন সিলেট বিভাগের এবং ২ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। এই ৫২ জনের মধ্যে ২৪ জনের বয়স ছিলো ৬০ বছরের বেশি, ১৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিলো। তাদের মধ্যে ৩৯ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ১০ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এছাড়া তিন জন মারা গেছেন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস শনাক্তে নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার টানা চার দিন ধরে ১০ শতাংশের নিচে রয়েছে, যা স্বস্তিদায়ক। সংক্রমণের হার আরো কমে গেলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া আরো সহজ হবে। সবাইকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি (মাস্ক পরিধান, সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া, ভিড় এড়িয়ে চলা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য) মেনে চলা ও সব সময় সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান তিনি। গতকাল দুপুরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন। অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, যেসব টিকাদান কেন্দ্রে করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়া হচ্ছে, সেসব কেন্দ্রের ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি নিবন্ধন করা হয়েছে, যার কারণে মোবাইল ফোনে এসএমএস পেতে সমস্যা হচ্ছে।

Comments (0)
Add Comment