নমুনা পরীক্ষায় প্রতি ৫ জনে শনাক্ত একজন : মৃত্যু ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ

স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাসে দেশে শনাক্ত এবং মৃত্যুর হার কমছে না। জুন মাসের শুরু থেকে প্রতিদিনই শনাক্তের সংখ্যা দুই হাজারের ওপরে আছে। টানা চার দিন ধরে মৃতের সংখ্যা ৩০-এর বেশি। শনাক্তের হারও ২১ দশমিক ১০ শতাংশ। অর্থাৎ নমুনা পরীক্ষায় প্রতি ৫ জনের মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন একজন। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৬৩৫ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশে এ পর্যন্ত মোট ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮১টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৩ হাজার ২৬ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মারা গেছেন আরও ৩৫ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৮৪৬ জনে। একই সময়ে সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫২১ জন। সর্বমোট সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৩২৫ জন। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ১৪ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা শনিবার নিয়মিত বুলেটিনে দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির এই তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে বগুড়ার টিএমএনএ মেডিকেল ও রেফাতউল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতাল। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে নমুনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় জীবাণমুক্তকরণের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নমুনা পরীক্ষাগার বন্ধ ছিলো। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অর্ধশত পরীক্ষাগারে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৯০৯টি। এর মধ্যে ১২ হাজার ৪৮৯টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৬৩৫ জন। শনাক্তদের মধ্যে পুরুষ ৭১ ও নারী ২৯ শতাংশ। নাসিমা সুলতানা আরও জানান, গত একদিনে মৃত ৩৫ জনের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী। এর মধ্যে ২৫ জন হাসপাতালে, ৯ জন বাড়িতে এবং একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিলো। মৃত ২০ জন ঢাকা বিভাগের, ৮ জন চট্টগ্রাম, ২ জন সিলেট, ৩ জন রাজশাহী এবং ২ জন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এদের মধ্যে একজনের বয়স ছিলো ৮০ বছরের বেশি। এছাড়া ৯ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ১০ জনের ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২ জনের ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ২ জনের বয়স ছিলো ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।
নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩১৪ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৭ হাজার ১৬২ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৮ জন। এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৪৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ হাজার ৭৮৯ জনকে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৯৯ হাজার ২২২ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৮১১ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৪২ হাজার ৯২৫ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৬ হাজার ২৯৭ জন। করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে অনুরোধ করে তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাস্ক পরা নিয়ে যে আপডেট দিয়েছে তাতে সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। বাসায় তৈরি তিন স্তরবিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক পরা যাবে। এগুলো একবার ব্যবহারের পর ধুয়ে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে। ভাইরাস প্রতিরোধে বারবার সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

Comments (0)
Add Comment