নানা উদ্যোগেও কমছে না পেঁয়াজের দাম

স্টাফ রিপোর্টার: সরকারের নানা উদ্যোগেও কমছে না পেঁয়াজের ঝাঁজ। গত দু’দিন ধরে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের উচ্চমূল্য অপরিবর্তিত আছে। দুর্বল তদারকির কারণেই মূলত এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ভারত রফতানি বন্ধ ঘোষণার পরদিন (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রতি কেজি পেঁয়াজ দেশের খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা। সোমবার ছয় দিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি কেজিতে ৩৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা। যা গত দু’দিন ধরে বহাল আছে। তবে গত ৩০ আগস্ট খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা। ফলে পণ্যটি কিনতে ভোক্তার এখন বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। সোমবার রাজধানীর সর্ববৃহৎ পাইকারি আড়ত শ্যামবাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬৫-৭০ টাকা। যা রোববার একই দাম ছিল। এ ছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি। যা আগের দিন একই ছিল। এ ছাড়া রাজধানীর খুচরা বাজারেও গত দু’দিন একই দামে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা কেজি।

এদিকে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাক সেলে ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির পাশাপাশি অনলাইনে বিক্রিতে প্রথমদিনই ব্যাপক সাড়া পড়েছে। ন্যায্যমূল্যে পণ্যটি কিনতে ক্রেতাদের হিড়িক পড়েছে উত্তরা, ধানম-ি, গুলশান ও বনশ্রীতে। সোমবার দুটি প্রতিষ্ঠান-স্বপ্ন অনলাইন ও চালডাল ডটকম সোমবার দুপুর ১২টার পর থেকে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে। এরপরই অনলাইনে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। টিসিবি সূত্র বলছে, রোববার সন্ধ্যায় সুপারশপ স্বপ্ন অনলাইন ও চালডাল ডটকমকে দেড় হাজার কেজি করে পেঁয়াজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে ঋণপত্র (এলসি) খোলার বিশেষ সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত বাকিতে এলসি খুলে পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সুযোগ বলবৎ থাকবে। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এর আগে পেঁয়াজ আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর পেঁয়াজ আমদানির এলসি মার্জিন ন্যূনতম রাখার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক টিম বাজার তদারকি করছে। পাশাপাশি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

ভারতে আটকে থাকা কিছু সংখ্যক পেঁয়াজবাহী ট্রাক এবং মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে ঢুকলেও এখনও বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বাজার মনিটরিং টিম পেঁয়াজের দাম কমাতে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এসে তদারকি করছে। নানা অজুহাতে জরিমানা করছে। তবে আমদানিকারক পর্যায়ে তদারকি করা না হলে পেঁয়াজের দর কমবে না। বরং ভোক্তার বেশি দরেই পেঁয়াজ কিনতে হবে। কারণ, ভারতের রফতানি বন্ধের ঘোষণার পর আমদানি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে। সেখান থেকে বেশি দরে এনে পাইকারি বিক্রেতাদের বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে।

 

Comments (0)
Add Comment