নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না আলু

স্টাফ রিপোর্টার: দাম বেঁধে দিয়েও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আলুর বাজার। গতকাল শুক্রবার কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, কোথাও সরকার নির্ধারিত ৩০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে না। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) তাদের দৈনন্দিন খুচরা বাজারদরের প্রতিবেদনে নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি না হওয়ার তথ্য তুলে ধরেছে। অবশ্য টিসিবি জানিয়েছে, গতকাল রাজধানীতে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। তবে খুচরা বাজারঘুরে কোথাও ৪৫ টাকা কেজি আলু পাওয়া যায়নি। মানভেদে রাজধানীর খুচরাবাজারগুলোতে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়।

এদিকে যে সবজি পণ্যটির দাম সবসময় হাতের নাগালে থাকতো, সেই পণ্যটির এই চড়া দামে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। বিশেষ করে যখন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজির নিচে অন্য কোনো সবজি নেই, তখন আলুর এই চড়া দামে হতাশ ক্রেতারা। গতকাল নিউমার্কেটে বাজার করতে আসা অনেক ক্রেতা এ ব্যাপারে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জেসমিন আক্তার নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী অনেকটা ক্ষোভের সুরেই বলেন, যদি নির্ধারিত দরে বিক্রি করা না হয়, তাহলে সরকারের দাম বেঁধে দিয়ে কি লাভ হলো? নিজের পরিচয় প্রকাশ না করে আরেক জন ক্রেতা বলেন, করোনা সংকটকালীন এ সময়ে অনেকের চাকরি নেই। আবার অনেকেই ঠিকমতো বেতনভাতা পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় যেভাবে চাল, তেল, পেঁয়াজ, সবজি , আলুর দাম বেড়েছে তাতে সংসার চলছে না।

উল্লেখ্য, দেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হলেও কোনো কারণ ছাড়াই গত এক মাস ধরে আলুর দাম বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ তিন-চার দিনের ব্যবধানে এক লাফে প্রতি কেজি আলুতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায় পৌঁছে যায় আলুর কেজি। এ অবস্থায় গত ১৪ অক্টোবর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রতি কেজি আলুর দাম হিমাগারে ২৩ টাকা, পাইকারিতে ২৫ টাকা এবং খুচরাবাজারে ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। সেই সঙ্গে নির্ধারিত দরে যাতে আলু বিক্রি হয় সেজন্য সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। চিঠিতে নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি নিশ্চিত করতে কঠোর মরিটরিং ও নজরদারির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়।

চিঠিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানায়, দেশে প্রতি বছর আলুর চাহিদা ৭৭ দশমিক ৯ লাখ টন। অথচ গত মৌসুমে প্রায় ১ কোটি ৯ লাখ টন আলু উত্পাদিত হয়েছে। এ হিসেবে, চাহিদা মেটানোর পরও প্রায় ৩১ দশমিক ৯১ লাখ টন আলু উদ্বৃত্ত থাকে। এখান থেকে কিছু পরিমাণ আলু রপ্তানি হলেও ঘাটতির আশঙ্কা নেই।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পেঁয়াজের পর এবার আলু নিয়ে কারসাজি শুরু করেছে সিন্ডিকেট। তারা সুযোগ বুঝে আলুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বাজারে কঠোর নজরদারির আহ্বান জানিয়েছে বলেছেন, হিমাগার থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা কত টাকা কেজি দরে আলু কিনল আর খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারদের কাছ থেকে কত টাকা কেজি দরে আলু কিনল তা ক্যাশমেমো দেখলেই তো বের হয়ে আসবে। এভাবে বিক্রির প্রতিটি পর্যায়ে নজরদারি করলে আলুর বাজার স্থিতিশীল হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

 

Comments (0)
Add Comment