পণ্যবাহী যান নিয়ে পদ্মায় ফেরিডুবে একজন নিখোঁজ

 

স্টাফ রিপোর্টার: পদ্মা নদীর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ৯টি পণ্যবাহী যান নিয়ে নোঙর করা ফেরি রজনীগন্ধা ডুবে গেছে। গতকাল বুধবার সকাল ৮টার দিকে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের কাছাকাছি এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ফেরিতে থাকা ১০ জন উদ্ধার হয়েছেন। এর মধ্যে চারজন সাঁতরে কূলে আসেন। আর ছয়জনকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। তবে ফেরির একজন মাস্টার এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। ডুবে যাওয়া ফেরি উদ্ধারে কাজ করছে ঊদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফেরি উদ্ধার হয়নি। তবে একটি মিনি কাভার্ডভ্যান ও একটি ট্রাক উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ফেরিটির ওজন বেশি হওয়ায় হামজার পক্ষে এটি উদ্ধার করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা। এজন্য আরও দুটি উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ও রুস্তমের আজ উদ্ধার কাজে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিসির পক্ষ থেকে পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে ফেরিডুবি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। নৌপুলিশের ফরিদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ফেরিটি দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাটে আসার পথে ডুবোচরে ধাক্কা লাগে। এতে ফেরির তলা ছিদ্র হয়ে পানি ঢুকতে থাকে। তবে কুয়াশায় পথ দেখতে না পেয়ে পাটুরিয়া ঘাটের ২০০ থেকে ২৫০ গজ অদূরে ফেরিটি নোঙর করে। এরপর ফেরিতে ধীরে ধীরে পানি ঢুকে সকাল আটটার দিকে নয়টি ট্রাকসহ ফেরিটি নদীতে ডুবে যায়। বিআইডব্লিউটিসি আরিচার আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে শুনেছি বাল্কহেডের ধাক্কায় ফেরিটি ডুবে গেছে। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।’ ফেরিতে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী ফজর আলী জানান, পাটুরিয়া ঘাটের অদূরে নোঙর করে রাখা হয় ফেরিটি। এ সময় তিনি ফেরিতেই ছিলেন। সকাল ৬টার দিকে ফেরিতে থাকা একজন বলতে থাকেন ফেরিতে পানি উঠছে। তখন ফেরির নোঙর খুলে দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর ফেরিটি চালু করা হলেও ততক্ষণে পানি উঠে ফেরিটি কাত হয়ে ঢুবে যেতে থাকে। এর পর ফেরিটি তলিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘অন্য কোনো ফেরি বা নৌযানের ধাক্কার ঘটনা ঘটেনি। ফেরিতে পানি ওঠার পর কাত হয়ে পানিতে তলিয়ে যায়।’ ফেরিটিতে থাকা আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ট্রাকচালক বলেন, ‘ভোর ৪টার দিকে ফেরিতে পানি উঠতে থাকে। এ সময় ফেরির লোকজন পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করেন। তবে ধীরে ধীরে এক পাশ কাত হয়ে ফেরিটি ডুবতে থাকে। একপর্যায়ে মালবাহী ট্রাকসহ ফেরিটি পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় ফেরিতে থাকা চালক ও ফেরির মাস্টাররা যে যার মতো নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে তীরে ওঠেন। তবে ফেরির একজন মাস্টার উঠতে পারেননি। তিনি এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার জানান, ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান একেএম মতিউর রহমান জানান, তাদের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।