পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার: করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি সুবিধাজনক অবস্থায় এলে এবং টিকা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সচিবদের সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ১৭ সচিব বক্তব্য রাখেন। সভার পর বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সভার বিষয়বস্তু ও আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
জানা গেছে, সচিবদের সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পরিস্থিতি তুলে ধরলে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। সভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৮ বছরের বেশি বয়সি সব শিক্ষার্থীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকার আওতায় আনতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগ পর্যন্ত অনলাইন ও অন্যান্য শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে হবে। সচিবদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বা ডেল্টা প্ল্যান, সেগুলো মাথায় রেখেই বাংলাদেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা- তা যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়। আমাদের একটাই লক্ষ্য, তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ যেন একটা উন্নত জীবন পায়, দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি পায়। তিনি বলেন, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসার সুযোগ যেন পায়। বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে ভবিষ্যতেও যাতে এগিয়ে যেতে পারে সেভাবে আমাদের কার্যক্রম চালাতে হবে। তার ভিত্তিটা আমরা তৈরি করেছি এবং সেটা ধরে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমাদের তো একটাই লক্ষ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন এবং বাংলাদেশটাকে তিনি উন্নত সমৃদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। আমরা সে লক্ষ্য পূরণে কাজ করছি। আমরা যখন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতার ১০১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করছি ঠিক সে সময়ে এই সভাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা, ১৫ আগস্টের সব শহীদ এবং মুক্তিযুদ্ধের সব বীর শহীদ এবং সম্ভ্রম হারা মা-বোনদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা যেন কোনোভাবে ব্যর্থ না হয়। বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব উন্নত সমৃদ্ধিশালী দেশের পথে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমাদের ভবিষ্যতে আরো অনেক দূর যেতে হবে এবং সে পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমাদের একটাই লক্ষ্য তৃণমূল পর্যায়ের মানুষগুলো যেন উন্নত জীবন, দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি, অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসার সুযোগ পায়। বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে ভবিষ্যতেও যেন একইভাবে এগিয়ে যেতে পারে, সেভাবে আমাদের কার্যক্রম চালাতে হবে।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে ব্রিফিং করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সর্বশেষ ক্রয়সংক্রান্ত সভায় ৬ কোটি ডোজ টিকা ক্রয়ের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ আমাদের জানিয়েছে, বিভিন্ন উৎস থেকে ২১ কোটি ৪ লাখ ডোজের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে ৩ কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা আমরা ক্রয় করেছি। দেশের মানুষকে ২ কোটি ৫ লাখ টিকা দেয়া হয়েছে। এখন ১ কোটি ৪ লাখ হাতে আছে। ধাপে ধাপে সেগুলো দেয়া হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন শিক্ষা কার্যক্রম ভার্চুয়ালি হোক বা অনলাইনে হোক চলুক। পাশাপাশি একটা ‘কমফোরটেবল সিনারিও’তে আসলেই যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সভায় খাদ্য সচিব প্রথমে খাদ্যের অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন। খাদ্য এবং কৃষির সমন্বয় প্রয়োজন। যাতে কোনোভাবেই দেশের খাদ্যের ঘাটতি না হয়। সেটি কৃষি বিভাগ যাতে স্পষ্ট করে দেয়, চাহিদা অনুযায়ী আমাদের উৎপাদন কতটুকু। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়লে আমদানি করবে, আর উদ্বৃত্ত থাকলে তো সেক্ষেত্রে প্রয়োজন নেই। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, খাদ্য এবং কৃষি একসঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। গতকালের সভায় ১৭ জন সচিব বক্তব্য দেন।

Comments (0)
Add Comment