পাট বোঝাই ট্রাক ফরিদপুর থেকে কৌশলে চুরি : গাংনীতে ট্রাকসহ দুজন গ্রেফতার

গাংনী প্রতিনিধি: বগুড়ার একটি পাটকলে ২৫২ মণ পাট পাঠানো হয় ট্রাকযোগে ফরিদপুরের মধুখালী থেকে। ট্রাকের মালিক ওই এলাকার বালিয়াঘাট গ্রামের নব মুসলিম কাউছার আলী নিজেই চালক হিসেবে গত ৯ সেপ্টেম্বর বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রাকটি জুটমিলে পৌঁছাইনি। চালকের সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিলো না। আসন্ন বিপদের অশনি সঙ্কেত মন টানে পাট মালিকের। তাই স্মরণাপন্ন হন থানা পুলিশের। মধুখালী থানা অভিযোগ আমলে নিয়ে শুরু করে তদন্ত। শেষ পর্যন্ত গতকাল রোববার বিকেলে পাটসহ ট্রাকের সন্ধান মেলে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বালিয়াঘাট গ্রামের একটি গুদামে। মধুখালী থানা পুলিশের এক অভিযানে ট্রাক মালিক পালিয়ে গেলেও গ্রেফতার করা হয় গাংনীর হাড়াভাঙ্গা গ্রামের ইয়াছিন আলীর ছেলে সুজন ও একই গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে কালামকে। ট্রাক মালিক এ দুজনের কাছে চুরি করা পাট রেখেছিলো।
পাটের মধুখালীর আসাদুজ্জামান জানান, তিনি বগুড়া মোকামতলা পাইকার জুট মিলে ২৫২ মণ পাট বিক্রির উদ্দেশে একটি ট্রাক লোড দেন। যার নম্বর ঢাকা মেট্রো ট-১৮-৩০৪৭। ট্রাকের মালিক কাউছার আলীর শ্বশুর বাড়ি গাংনীর বালিয়াঘাট গ্রামে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মিলে ট্রাকটি না পৌঁছুনোর কারণে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে কাউছার আলীকে প্রধান আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানার এসআই তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ট্রাক মালিক কাউছারের মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। আসামি গ্রেফতার ও পাট উদ্ধারের জন্য গাংনী থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালানো হয় বালিয়াঘাট গ্রামে। কাউছার আলীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার এবং ট্রাকসহ পাট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। তাদেরকে মধুখালী থানায় নেয়া হয়েছে।
এসআই তোফাজ্জেল হোসেন আরও জানান, পূব পরিকল্পিতভাবে পাট চুরি করে কাউছার আলী। ট্রাকটি মধুখালী থেকে বালিঘাট গ্রামে আনার পূর্বেই সামনের গ্লাস ও অন্যান্য অংশ খুলে ট্রাকটির রুপ পরিবর্তন করা হয়। যাতে সহজেই কেউ ট্রাকটি চিনতে না পারে। একটি গুদাম ভাড়া নিয়ে গ্রেফতারকৃত সুজন কালামের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছিলো পাট। কাউছার আলী নিজেকে পাট ব্যবসায়ী দাবি করে বেচাকেনার বিষয়টি প্রমাণ করার চেষ্টা করেন স্থানীয়দের মাঝে। তবে গ্রেফতারকৃত দুজনের পরিবারের দাবি তারা চোর নয়। কাউছারের কাছ থেকে ক্রয় করে বিক্রি করছিলো পাট। চুরির পাট কি না তা তারা জানতেন না।
মধুখালী থানার ওসি আমিনুল হক জানান, পাট মালিক বাদী হয়ে কাউছার আলীকে প্রধান আসামি করে ছয় জনের নামে মামলাটি দায়ের করেন। গ্রেফতার হওয়া দুজন ওই মামলার আসামি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ। আজ সোমবার কালাম ও সুজনকে ফরিদপুর আদালতে সোপর্দ করা হবে। গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবাইদুর রহমান বলেন, মামলার সূত্র ধরে মধুখালী থানা পুলিশের অভিযানে সহায়তা দেয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য তাদের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

Comments (0)
Add Comment