ফেব্রুয়ারিতে শিলাবৃষ্টি ও বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা

চলতি মাসে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস

স্টাফ রিপোর্টার: চলতি মাসে আরও একটি মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়া অধিদফতর দীর্ঘমেয়াদী ওই পূর্বাভাসে শৈত্যপ্রবাহের পাশাপাশি শিলাবৃষ্টি ও বজ্রঝড়ের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে। এদিকে বিরাজমান শৈত্যপ্রবাহের বিস্তারও কমে আসছে। ঠা-া আগের মতো অনুভূত হচ্ছে না। বেলা যতো বাড়ছে, গায়ে গরম পোশাক রাখা বেশ অস্বস্তির হয়ে পড়ছে। তবে কি শীত বিদায় নিচ্ছে? আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শীত বিদায় নিতে পারে। দেশের বেশকিছু অঞ্চল গত ২৪ ঘণ্টায় শৈত্যপ্রবাহমুক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার তিন বিভাগ ও ১৬ অঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। বুধবার দুই বিভাগ ও আট অঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। দু-এক দিনের মধ্যে বিদায় নিতে পারে শৈত্যপ্রবাহ।
অপরদিকে, গতকাল বুধবার আবহাওয়াবিদ মো. সামছুদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত ওই পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, চলতি মাসের প্রথমার্ধে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে এক-দুটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ (০৬-১০ সেলসিয়াস) বয়ে যেতে পারে। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে দেশের নদ-নদীর অববাহিকা ও অন্যত্র সকালের দিকে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা থাকার সম্ভাবনা আছে। এ ছাড়া মাসের শেষার্ধে দেশের কোথাও কোথাও এক-দুই দিন শিলাবৃষ্টি ও বিজলি চমকানোসহ বজ্রঝড় হতে পারে। ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের নদ-নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে।
উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তার লাভ করায় ১-৩, ১৩-১৮ জানুয়ারি সময়ে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ এবং যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ এবং ২৮-৩১ জানুয়ারি সময়ে কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী অঞ্চলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহসহ রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগ এবং চুয়াডাঙ্গা, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শ্রীমঙ্গল অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। এ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫.৫ সেলসিয়াসে নেমে আসে রাজারহাটে।
আবহাওয়া উপাত্ত, ঊর্ধ্বাকাশের আবহাওয়া বিন্যাস, বায়ুম-লের বিভিন্ন স্তরের বিশ্লেষিত আবহাওয়া মানচিত্র, জলবায়ু মডেল ইত্যাদির যথাযথ বিশ্লেষণ করে ফেব্রুয়ারি মাসের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, চলতি মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানানো হয়।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে টেকনাফে ২৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। রাজশাহী, রংপুর বিভাগসহ চুয়াডাঙ্গা, যশোর, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, বরিশাল, ভোলা, গোপালগঞ্জ, সীতাকু- ও শ্রীমঙ্গল অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বলেন, তীব্র শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেছে এখন। বেশ কিছু এলাকায় মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। বুধবারও কিছু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হয়েছে। শীতের দাপট এ সপ্তাহজুড়ে থাকবে বলে মনে করছেন তিনি।
চলতি মরসুমে গত ১৮ থেকে ২৩ ডিসেম্বর এবং ২৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর রংপুর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। তৃতীয় দফা শৈত্যপ্রবাহ শুরুর পর গত ৩১ জানুয়ারি উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রামের রাজারহাটে থার্মোমিটারের পারদ নেমে যায় ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি শীত মরসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। পরদিন ১ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলে একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

Comments (0)
Add Comment