বউভাতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ২০ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বউভাতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁকা গ্রামে নদীর ধারে এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে ১৬ জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন জমিলা (৫৮), তবজুল (৭০), আদল (৩৫), রফিকুল (৬০), লেচন (৫০), সজীব (২২), টকি বেগম (৩০), আলম (৪৫), পাতু (৪০), সহবুল (৩০), বেলি বেগম (৩২), বাবলু (২৬), মোছা. মৌসুমী (২৫), টিপু সুলতান (৪৫), বাবু (২০) ও অসিকুল ইসলাম ডাকু (২৪)।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পাঁকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন মাস্টার জানান, সদর উপজেলার নারায়ণপুর থেকে বউভাতের অনুষ্ঠানে আসার পথে বৃষ্টি শুরু হলে নৌকার সবাই নদীর ধারে একটি অস্থায়ী ছাউনির নিচে আশ্রয় নেন। এ সময় সেখানে হঠাৎ বজ্রপাত শুরু হলে ঘটনাস্থলেই ১৫ থেকে ১৬ জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে যাওয়ার পথে আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২০ জনের মতো মারা গেছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, মৃতদের মধ্যে ১৯ জন বউভাতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার যাত্রী ছিলেন। এছাড়া মৃত আরেকজন দক্ষিণ পাকা গ্রামের নৌকার মাঝি ছিলেন। সব মিলে নৌকায় নারী-শিশু মিলে ৫৫ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই বৃষ্টি আসার পর নৌকা থেকে নেমে নদীর ধারে উঠে আসেন।
আহতদের শিবগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। মৃতদের পরিচয় জানতে সুর্যনারায়ণপুরে পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রাকিবসহ পুলিশের একটি দল গেছেন বলে জানান শিবগঞ্জ থানার ওসি ফরিদ হোসেন। স্থানীয়রা ২০ জন বললেও শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব-আল-রাব্বী বিকেল ৪টায় জানান মৃতের সংখ্যা ১৭ জন।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন জানান, নৌকাটি দক্ষিণ পাঁকা গ্রামের ঘাটে এসে পৌঁছার পরপরই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, হাসপাতালে আহতদের আনা হচ্ছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে গুরুতর আহত এক শিশুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শুনেছি শিশুটির বাবা-মা মারা গেছেন। সবার নাম ও ঠিকানা সংগ্রহে পুলিশ কাজ করছে।
ফায়ার সার্ভিস চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশনের উপপরিচালক সাবের আলী জানান, মৃত ও আহতদের নৌকায় করে সদর উপজেলার আলিমনগরের ঘাটে নিয়ে আসলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. কামরুন নাহার নাসু বলেন, বিকেল ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালে মৃত ১২ জনকে আনা হয়। এছাড়াও আহত অবস্থায় আরও ৯ জনকে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে এক শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।

Comments (0)
Add Comment