ভারত থেকে আসা ৩৫৪ মেট্রিক টন চাল নিম্নমানের, খালাস বন্ধ : দর্শনায় পৌচেছে গম ও পাথরের বড় চালান

ভারত থেকে আমদানি করা চালের মধ্যে মরা, নষ্ট ও বিবর্ণ চালের পরিমাণ বেশি হওয়ায় ছয়টি ওয়াগন থেকে চাল খালাস বন্ধ করে দিয়েছে খাদ্য বিভাগ। দর্শনা বন্দর হয়ে এসব চাল দেশে আনা হয। তিন দিন ধরে ওই পাঁচ ওয়াগন চাল বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশনের খালাস স্থানে রাখা হয়েছে। এদিকে সোমবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে ভারত থেকে গম ও পাথরভর্তি দুটি বড় চালান দর্শনা বন্দরে পৌঁছেছে।
দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে স্থলপথে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী যাতায়াত গত বছর থেকে বন্ধ থাকলেও এ পথে জরুরি খাদ্য পণ্য আমদানি অব্যাহত রয়েছে। জানা যায় গত বছর দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে ঐ বছরের ২৬ মার্চ থেকে দর্শনা আন্তর্জাতিক স্থলপথে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। অল্প কিছুদিন দর্শনা বন্দর বন্ধ থাকার পর ফের ভারত থেকে জরুরি খাদ্য চাল গম পেয়াজের বড় বড় চালানসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি শুরু হয়। সরকার এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ভারত থেকে ৮২হাজার ১শ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেছে। সোমবার (২৬ এপ্রিল) দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ থাকলেও ভারত থেকে ২৩শ মেট্রিক টন গম ও ২২শ মেট্রিক টন (স্টোন) পাথর দর্শনা বন্দরে এসে পৌঁছেছে। সে ক্ষেত্রে পূর্ব নির্ধারিত অর্থাৎ করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় যে স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা ছিল, সে ভাবেই চলছে দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল বন্দরটি। ইতি মধ্যে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও নতুন ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে ভাইরাসটি বাংলাদেশে ছড়িয়ে যেতে পারে আশঙ্কায় সব সীমান্ত সোমবার থেকে বন্ধের ঘোষণা এসেছেন। অপরদিকে বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান বলেছেন, ই ছয় ওয়াগনে প্রায় ৩৫৪ মেট্রিক টন ভারতীয় চাল রয়েছে। বগুড়ার সান্তাহার কেন্দ্রীয় খাদ্য সংরক্ষণাগার (সিএসডি) কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, দেশের অভ্যন্তরীণ খাদ্যসংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয় জি টু জি (সরকার টু সরকার) চুক্তির আওতায় ভারত থেকে রেলপথে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সে অনুযায়ী ৩ এপ্রিল থেকে রেলপথে বাংলাদেশের দর্শনা স্থলবন্দর হয়ে ভারত থেকে ৫ র‌্যাকে ২০৫ ওয়াগন চাল বাংলাদেশে প্রবেশ করে বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশনে আসে। আমদানি করা চালের পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার ৯৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ছয়টি ওয়াগনে প্রায় ৩৫৪ মেট্রিক টন চালে মরা, বিনষ্ট ও বিবর্ণ চালের পরিমাণ বেশি হওয়ায় সেগুলোর খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে। সান্তাহার কেন্দ্রীয় খাদ্য সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থাপক দুলাল হোসেন জানান, আমদানি করা চাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সান্তাহার কেন্দ্রীয় খাদ্য সংরক্ষণাগারে মজুত করে রাখা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৩৭৬ মেট্রিক টন চাল ওয়াগন থেকে খালাস করা হয়েছে।
ছয়টি ওয়াগনের চাল খালাস বন্ধ রাখার বিষয়ে বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান সোমবার দুপুরে বলেন, সাধারণত চাল গ্রহণের ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ শতাংশ মরা, বিনষ্ট ও বিবর্ণ গ্রহণের বিধান থাকলেও ওই সব ওয়াগনে থাকা চালে এর পরিমাণ অনেক বেশি। বিষয়টি খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। চালের নমুনা খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত ওই ছয় ওয়াগনের চাল খালাস বন্ধ রাখা হবে।

Comments (0)
Add Comment