মাথাভাঙ্গা ও ভৈরব নদীতে এপর ওপার বাঁশের বাঁধ দিয়ে কারেন্ট জালে মাছ শিকার

নিধন হচ্ছে গলদা চিংড়েসহ মাছের পোনা : নদী হারাচ্ছে নাব্যতা

হাসেম রেজা: দীর্ঘদিন ধরে ‘মাথাভাঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন’ জোরেসোরে চলছে। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু মৎস্যজীবীরা এপর ওপার বাঁশের বানানো বাঁধ দিয়ে কারেন্ট জালের মাধ্যমে মাছ শিকার করছে। এসব কারেন্ট জালে ছোট-বড় নানা প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে। যে কারণে একদিকে নিধন হচ্ছে মাছের পোনা, অন্যদিকে ভরাট হচ্ছে ¯্রােতম্বিনী মাথাভাঙ্গা নদী। তাছাড়াও গাছের ডালপালা দিয়ে কোমর দেয়ায় নাব্যতা হারাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এ নদী। চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মাথাভাঙ্গা নদীর শাখা ভৈরব দামুড়হুদার রঘুনাথপুর ব্রিজের ওপর থেকে দেখলে দেখা যায় বড় বড় করে বাশের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এছাড়াও জিরাটের পাশে নদীতে বেশ কয়েকটি স্থানে বাঁধ দিয়ে ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা হচ্ছে। এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালীর ক্ষমতার দাপটে নদীর মাঝে বাসের বাঁধ ও মশারি আকৃতির এবং কারেন্ট জাল দিয়ে বাঁধ সৃষ্টি করে অবাধে প্রতিদিন মাছ ধরা হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নদীর ¯্রােত। মারা যাচ্ছে রেণু পোনা আর মাছের প্রজনন সমস্যা হচ্ছে। অবৈধভাবে নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছেন দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের গোবিন্দ হালদারের ছেলে নিমাই হালদার, মদন হালদারের ছেলে গণেশ হালদার ও নিরজল হালদার। দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের পারকৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষ্ণ হালদার, গোপাল হালদার ও বিষ্ণু হালদার। এরা সবাই নদীর এপার থেকে ওপার পর্যন্ত বাঁধ দিয়ে অবাধে পোনা মাছ থেকে শুরু করে ডিমওয়ালা মাছ ধরছে। এ ব্যাপারে মাছ শিকার করা হালদারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ামরা মাছ ধরে সংসার চালায়। তাছাড়াও বাব-দাদার পেশা মাছ ধরা। এছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেয়। তাই নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছি।
দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. আয়ুব আলী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে তালিকা তৈরী করছি। যারা বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে দামুড়হুদা উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. সেলিম রেজা বলেন, এখন মা মাছ ডিম ছাড়ে। আর ডিম ছাড়ার জন্য প্রয়োজন হয় ¯্রােতের। কিন্তু নদীতে যদি বাঁধ দেয়া হয় তাহলে মাছের প্রজনন সমস্যা হয় এবং রেণু পোনা মারা যায়। আর ¯্রােত বাধাগ্রস্ত হলে মাছের বেড়ে ওঠাও সম্ভব হয় না। তিনি আরো জানান, নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ এবং মৎস্য সংরক্ষণ আইনী সম্পূর্ণ নিষেধ। বিষয়টি শুনেছি। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে গতকাল এ বিষয় নিয়ে বসে তালিকা তৈরী করেছি। খুব দ্রুত অপসরণের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনোক্রমেই নদীতে বাঁধ দিতে দেয়া হবে না। এর জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হবে। সচেতন মহল মনে করে যেখানেই ¯্রােত বাঁধাগ্রস্থ হয়, সেখানেই পড়ে পলি মাটি। যে কারণে ভরাট হয়ে যায় নদী। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতন মহল।

Comments (0)
Add Comment