মিয়ানমারে স্থিতিশীলতা দেখতে চায় বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার: মিয়ানমারে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক সেটি দেখতে চায় বাংলাদেশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল ও রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও দেশটিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নীতিতে বিশ্বাসী বাংলাদেশ। মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ব্যবস্থা সমুন্নত থাকবে বলে বাংলাদেশ আশা করে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বন্ধুরাষ্ট্র হিসাবে আমরা চাই মিয়ানমারে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক। পারস্পরিক স্বার্থরক্ষা করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনে দুই দেশ কাজ করছে। আমরা আশাকরি এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
গতকাল সোমবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানান, মিয়ানমারের পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চিসহ দেশটির শীর্ষ নেতাদের সোমবার ভোরে আটক করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। মিয়ানমারের শীর্ষ নেতাদের আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। মিয়ানমারে আটক সব নেতাকে ছেড়ে না দিলে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অস্ট্রেলিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর দেশটির সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গতকাল সোমবার ভোর থেকে সীমান্তে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।
নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়া উপজেলার তুমব্রু, ঘুনধুম, বালুখালী, পালংখালী এবং টেকনাফ সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে দৃষ্টি রেখে বিজিবি সদস্যরা সীমান্ত চৌকিগুলোতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান। ঘুনধুম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছৈয়দুল বশর জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে সীমান্ত এলাকার মানুষের মাঝে কিছুটা ভয়ভীতি কাজ করছে। সীমান্তের বাইশপাড়ি এলাকার আবদুর রহমান বলেন, সোমবার সকাল থেকে মিয়ানমারে সেনা ও বিজিপি সদস্যদের তৎপরতা দেখা গেছে। ফলে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে? বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ জানান, সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। সীমান্তে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখছে বিজিবি। আতঙ্কের কোনো কারণ নেই।
বান্দরবান সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিজিবি। নাইক্ষ্যংছড়ি, থানচি, রুমা, আলীকদম উপজেলার সীমান্ত নিরাপত্তা চৌকি ভিওপিগুলোতে বিজিবি বাড়তি সতর্কবস্থা নিয়েছে। বান্দরবান বিজিবি সেক্টরের উপ-অধিনায়ক (টুআইসি) মেজর এখলাস জানান, সীমান্তজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ভিওপিগুলো সতর্কবস্থায় রয়েছে। সেক্টর কমান্ডারের নির্দেশনা মোতাবেক সীমান্ত পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

Comments (0)
Add Comment