যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা ভারতের উদ্বেগ স্থিতিশীলতা চায় চীন

মাথাভাঙ্গা মনিটর: মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ও জরুরি অবস্থা জারির নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সতর্ক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে চীন মিয়ানমারে স্থিতিশীলতা চেয়েছে।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জেন সাকি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন বা গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতার পরিবর্তন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার যে কোনো প্রচেষ্টা আমেরিকা প্রত্যাখ্যান করছে। যদি এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা না হয়, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’ হোয়াইট হাউজ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশের গণতান্ত্রিক হস্তান্তরকে ধ্বংস করার যে প্রয়াস চালিয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্র সেদেশের সামরিক ও অন্যান্য দলকে গণতান্ত্রিক ধারা ও আইনের শাসন মানতে এবং আটককৃত সবাইকে মুক্তি দিতে অনুরোধ জানাচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন দ্রুত সেনাবাহিনীকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে। জাতিসংঘ সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে আটক সবাইকে মুক্তি দিয়ে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ মিয়ানমার ইস্যুতে আজ মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারে যা ঘটছে তা আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি। মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার প্রতি ভারতের সমর্থন সব সময়ই অবিচল ছিল। আমরা বিশ্বাস করি যে আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত থাকবে। আমরা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছেন। অং সান সু চিকে গ্রেফতারের ঘটনার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী একে ‘বেসামরিক নাগরিকদের বেআইনি অবরোধ’ বলে উল্লেখ করেছেন। এক টুইটে জনসন বলেন, ‘মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান এবং অং সান সু চিসহ বেসামরিক নাগরিকদের অবরোধের নিন্দা জানাচ্ছি। জনগণের ভোটকে স্বীকৃতি দিয়ে বেসামরিক নেতাদের মুক্তি দেয়া উচিত। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান চার্লস মিশেলও মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছেন এবং আটক নেতাদের মুক্তি দাবি করেছেন। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট তার টুইটে বলেন, নির্বাচনের ফলকে স্বীকৃতি দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনর্বহাল করা উচিত।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ চীন খুবই সতর্ক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। চীন সরকারের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি দেয়া হয়নি। তবে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র তাদের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সংক্ষিপ্ত ও সতর্ক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, মিয়ানমারের ঘটনাবলির দিকে চীন নজর রাখছে এবং ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘চীন মিয়ানমারের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী এবং আমরা মনে করি দেশের সাংবিধানিক ও আইনি কাঠামোর মধ্যে মিয়ানমারের বিভিন্ন পক্ষ তাদের মতভেদ দূর করবে এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।’ সেনা অভ্যুত্থানকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি কম্বোডিয়া। জাপানের চিফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি কাসুনোবু কাটো বলেছেন, জাপান বিশ্বাস করে যে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আলোচনার মাধ্যমে দুই পক্ষের সমস্যার সমাধান করা উচিত। অস্ট্রেলিয়া সেনা অভ্যুত্থান ও জরুরি অবস্থা জারির নিন্দা জানিয়েছে।

Comments (0)
Add Comment