রিজভী কি দফতর থেকে ছিটকে পড়লেন?

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির দায়িত্বশীল পদগুলো থেকে ‘পরীক্ষিত ও ত্যাগীদের’ সরিয়ে ‘সংস্কারপন্থীদের’ পদায়ন করা হচ্ছে বলে দলটির নেতাকর্মীদের একাংশের অভিযোগ বহুদিনের। সেই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় দফতরের দায়িত্বে সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদের জায়গায় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স অভিষিক্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ ওই নেতাকর্মীদের। যদিও শীর্ষ নেতৃত্ব বলছে, প্রিন্স রুটিনমাফিক দায়িত্ব পালন করছেন, রিজভী ফিরলেই প্রিন্স সরে যাবেন।

গত ১৩ অক্টোবর দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে রুহুল কবির রিজভী অসুস্থতা বোধ করেন। পরে তাকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে দ্রুত নিকটস্থ কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে তার এনজিওগ্রাম করা হয়, তাতে হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। পরে শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হলে বাসায় চলে যান রিজভী। তারপর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে রয়েছেন তিনি। রিজভীর অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক হিসেবে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

বলা হচ্ছে, এর আগে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, বরকতউল্লা বুলু বা সালাহউদ্দিন আহমেদ সাময়িকভাবে দফতরের দায়িত্ব পালন করলেও তাদের সেই দায়িত্ব লিখিতভাবে দেয়া হয়নি। মৌখিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয় তাদের। কিন্তু প্রিন্সের ক্ষেত্রে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরে চিঠি ইস্যু হয়েছে। বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা হিসেবে রিজভীকে নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ রয়েছে। বলা হয়, দলের মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির নেতাদের অন্ধকারে রেখে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে বুঝিয়ে কমিটি অনুমোদন করিয়ে নেন তিনি। পাশাপাশি দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের কর্মসূচি থাকলে প্রায়শই একই সময়ে রিজভীও কর্মসূচি রাখেন। ফলে ওই গুরুত্বপূর্ণ নেতারা কাঙ্খিত মিডিয়া কাভারেজ থেকে বঞ্চিত হন। সব মিলিয়ে রিজভীবিরোধী একটা শক্ত বলয় তৈরি হয় দলের মধ্যে। তারই পরিণতি হিসেবে রিজভীকে ছিটকে পড়তে হয়েছে দফতর থেকে।

Comments (0)
Add Comment