সবাইকে উপকৃত করার জন্য এ বাজেট প্রণয়ন করেছি

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

স্টাফ রিপোর্টার: প্রস্তাবিত বাজেট প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সহায়ক বাজেট। দেশের মানুষের সহায়ক বাজেট। এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। যারা কষ্ট করে জীবনযাপন করছেন তারাও উপকৃত হবেন। সবাইকে উপকৃত করার জন্য এ বাজেট প্রণয়ন করেছি। আমি একজন অ্যাকাউটেন্ট, আমি নাম্বারে বা সূচকে ভুল করি না। শুক্রবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি আরও বলেন, একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে আগামী বছরটি অতিক্রম করতে হবে। অনেক কিছুর ওঠানামা থাকবে। এগুলোর সবকিছু উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম হবো।

পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সবদিক বিবেচনা করেই আমরা এবার এ সুযোগ দিয়েছি। শুধু ঘুস ও দুর্নীতির টাকা নয়, সিস্টেমের কারণেও অনেক টাকা অপ্রদর্শিত হয়ে যায়। বাংলাদেশ শুধু নয়, আমেরিকাসহ বিশ্বের ১৭টি দেশ এ সুযোগ দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি এক্ষেত্রে আমরা সফল হবো।

রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে দুপুর ৩টায় এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। গতানুগতিক প্রতিবছর বাজেটের পরদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অর্থমন্ত্রী। গত দুই বছর হয়নি করোনা ভাইরাসের কারণে। এ বছর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম প্রস্তাবিত বাজেটকে সংকোচনমূলক বাজেট বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, সরকারের ব্যয় মানেই হচ্ছে জনগণের আয়। আয় বাড়লে চাহিদা বেড়ে যায়। বর্ধিত চাহিদা না আসে এজন্য এবারের বাজেট সংকুচিত রাখা হয়েছে।

এবার সংবাদ সম্মেলনে অধিকাংশ প্রশ্নই ছিল পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনা প্রসঙ্গে। এ বিষয়ে একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশ এই সুযোগ দিয়েছে। আইন সংশোধন করে একটি ঘোষণা দিয়ে ২০১৬ সালে ইন্দোনেশিয়া ৯৬০ কোটি মার্কিন ডলার ফেরত নিয়ে আসছে। আমরা প্রশ্ন করব না, কারণ টাকাগুলো বিভিন্ন কারণে বিদেশ চলে যেতে পারে। সব টাকা কালো টাকা নয়। কিছু টাকা বিভিন্ন কারণেই কালো হয়ে যায়। এসব দিক বিবেচনা করেই আমরা এবার এ সুযোগ দিয়েছি।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, টাকার একটি ধর্ম আছে। টাকা যেখানে সুখ বিলাস পায় সেখানে চলে যায়। স্যুটকেসে করে কেউ টাকা পাচার করে না। ডিজিটালাইজেশন যুগে অনেক টুলস আছে পাচারের জন্য। দায়িত্ব নিয়ে বলছি জামানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, নরওয়ে এই সুযোগ দিয়েছে। টাকা পাচার হয়নি সেটি বলি না। কিন্তু যেভাবে বলা হচ্ছে সেভাবে টাকা পাচার হয়নি। তবে এই পাচারের সঙ্গে যারা যুক্ত দেশের ভেতর অভিযুক্ত অনেকের বিচার হচ্ছে। সরকার নীরব থেকে বসে নেই। পাচারকৃত টাকা এ দেশের মানুষের হক। এখানে বাধা দেইনি। বাধা দিলে টাকা আসবে না। পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, পাচারকৃত অর্থ ফেরত না এলে আমাদের লাভ কী। গত দুই বছরে ১৭টি দেশ এই উদ্যোগ নিয়েছে টাকা ফেরত আনার। আমেরিকাও করেছে। মালয়েশিয়াও করেছে। আশা করি এ উদ্যোগ নিলে আমরা সফল হবো। এতে করে যারা কর দিচ্ছে তাদের সম্মান ক্ষুণœ হবে না।

পিকে হালদারের টাকা পাচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেটি প্রমাণ করা যায় না। সেটি কীভাবে ফেরত আনা যাবে। অনেকে বলে সুইজারল্যান্ডে ব্যাংকে টাকা আছে। কিন্তু কোনো প্রমাণ নেই। একটি ভালো দিক আছে। পৃথিবী এখন একীভূত হচ্ছে। মন্দকাজগুলো দূরে রাখার চেষ্টা করছে।

পিকে হালদার ভালো অবস্থায় নেই। ভারত সরকার স্বীকার করেছে পিকে হালদারের পাচারকৃত টাকা ফেরত দেবে এবং পিকে হালদারকেও ফেরত দেবে। কানাডার সরকারও স্বীকার করেছে পিকে হালদারের টাকা ফেরত দেবে। আমি মনে করি এখনই সুন্দর সময় ফেরত আনার যারা বিদেশে টাকা নিয়ে গেছেন, হয়তো জেনে বা না জেনেও নিয়ে গেছেন। অর্থনীতির মূলধারায় ওইসব টাকা ফেরত আনার ব্যাপারে কাজ করছি। আমরা বাজেটে বলেছি, প্রশ্ন করা হবে না রেমিট্যান্সের ব্যাপারে। সেটি করা হয়নি। এক্ষেত্রেও কোনো প্রশ্ন করা হবে না। এখন বাঁচার একমাত্র উপায় সরকারের আইন-কানুনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে টাকা ফেরত আনা।

অর্থনীতির সার্বিক দিক বিশ্লেষণ করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এবার বাজেটে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেশের জনগণের নতুন নতুন আশা ও সুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে। প্রতিটি খাতে আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এতে প্রান্তিকসহ আপামর দেশের মানুষ উপকৃত হবেন। এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনীতি আরও শক্তিশীল করা হবে। উন্নয়নমুখী ভাবনার প্রতিফলন ঘটেছে। এবার বাজেটের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, কোভিডের অভিঘাত-পরবর্তী উন্নয়নের ধারাবাহিকতা।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, অনেক সময় বলা হয় সুইচ ব্যাংকে বাংলাদেশের পাচারের টাকা আছে। এর ৯৫ শতাংশ দেখা গেছে বিদেশে বাংলাদেশির ব্যবসা-বাণিজ্যের টাকা অথবা ব্যাংকে যেগুলো সেটেলমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছে। বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে সুইচ ব্যাংকে আছে এমন কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি।

সংসদীয় আইন অনুযায়ী গোপন থাকবে অর্থ পাচারকারীদের নাম : টাকা ফেরত দেয়ার পর টুথ-কমিশন গোপন রাখেনি। একইভাবে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে গোপনীয়তা কতটুকু রাখা হবে। অর্থমন্ত্রীর নির্দেশে এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, টুথ কমিশনের প্রতিশ্রুতি কোনো সংসদীয় প্রতিশ্রুতি ছিলো না। আইন দ্বারা কোনো কমিটমেন্ট ছিল না। এখন যেটা করা হচ্ছে সেটি সংসদে পাশ করা একটি আইনের মাধ্যমে। কাজেই টুথ কমিশনের সঙ্গে মেলালে এটা এক হবে না। আইনে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না। ওই সময় সংবাদ সম্মেলনে ফ্লোর নিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, টুথ কমিশন কোনো নির্বাচিত সরকারের ছিল না। আমাদের নির্বাচিত সরকার। এই সরকারের ধারাবাহিকতা আছে। আমরা দেখছি অনেকে গণতন্ত্রের লেবাস পড়ে সামরিক সরকার দেশ পরিচালনা করে। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সাংবিধানিক সরকার। সে আলোকে আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি বিদেশ থেকে পাচারকৃত টাকা নিয়ে এলে কোনো প্রশ্ন করা হবে না। এ সময় অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এ প্রসঙ্গে বলেন, অজ্ঞাত বা ভুলবশত করদাতা রিটার্নে যে টাকাটা প্রদর্শন করেননি, তাদের রিটার্ন হালনাগাদ করতে এ সুযোগ দেয়া।

দেশি পণ্য দেশে ব্যবহার করতে হবে : অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দেশের ভেতর যেসব পণ্য উৎপাদন হয়, তার মান ভালো থাকে সেগুলো দেশের ভেতর আরও অগ্রাধিকার পাবে। সে জিনিসগুলো বিদেশ থেকে আনার ব্যাপারে আরও ভালোভাবে দেখে নেব। এ বিষয়টি গত দুই বাজেট থেকে অনুসরণের চেষ্টা করছি। দেশের ভেতর উৎপাদিত পণ্য দেশে থেকে কিনতে হবে। ওইসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানিতে নিরুৎসাহিত করা হবে। এই চিন্তা থেকে মেইড ইন বাংলাদেশ নীতি প্রণয়ন করেছি।

গরিব হওয়ার দুঃখ : অর্থমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, গরিব হওয়া অনেক কষ্টের, কারণ আমি নিজেই গরিব ছিলাম। আমি জানি এর হাত থেকে যদি মুক্তি পেতে চাই তাহলে আমাদের যা কিছু সামর্থ্য আছে সবকিছু একীভূত করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এ দেশে যে গরিব মানুষ আছে তাদের প্রত্যেককে সামনে রেখে বাজেট করা হয়েছে।

কালোটাকা বিনিয়োগ প্রসঙ্গে : প্রস্তাবিত বাজেটে আইটি ক্ষেত্রে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া কতটা সফল হবে জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কালো নয়, অপ্রদর্শিত টাকা বলা হয়। জমি, ফ্ল্যাট কেনাবেচনায় সঠিক মূল্য দেখানো হয় না। এতে অনেক টাকা অপ্রদর্শিত থেকে যায়। সে টাকাগুলো প্রদর্শনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কৌশল : মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, চাহিদা ও সরবরাহ ঠিক রাখা হচ্ছে। সিন্ডিকেট করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বাজারে অস্থিরতা শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বে হচ্ছে। গত এক বছরে জিনিসপত্রের দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এর আংশিক হলেও বেড়েছে। যতই ভালো ফাইনান্স মিনিস্টার বানান, যত নিজে ফাইনান্স মিনিস্টার হন এটি মেনেজ করা নির্ভর করে বিশ্ব প্রেক্ষাপটের ওপর।

তিনি আরও বলেন, চ্যালেঞ্জ কখনো একা আসে না। এর সঙ্গে সম্ভাবনা নিয়ে আসে। চ্যালেঞ্জ জানালা দিয়ে এলে সম্ভাবনার দরজা খুলে যায়। এটি চ্যালেঞ্জিং টাইম। আমি মনে করি সুযোগ আসবে। আমাদের রপ্তানি আয় এখন ৫০ বিলিয়ন ডলার। যা পৃথিবীর কোনো দেশে এত প্রবৃদ্ধি নেই রপ্তানিতে।

আমাদের অর্থনীতির অনেক এলাকা আছে যা পুরোপুরি সক্রিয় করেনি। আমাদের ৪ কোটি মানুষ মধ্যবিত্তের। সবাই কর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বাজেটে ঘোষণা দিয়েছি। সবকিছু ডিজিটাল করব। রাজস্ব আহরণ প্রবৃদ্ধি ৪০ শতাংশ করতে পারলে কোনো চ্যালেঞ্জ থাকবে না।

সরবরাহ বাড়িয়ে চাহিদা কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, সরবরাহ বাড়ানোর অর্থ উৎপাদন বাড়ানোকে বোঝানো হয়েছে। উৎপাদন বাড়লে কৃষক ভালো থাকবে এবং মানুষ বেশি খেতে পারবে। এজন্য কৃষিতে আরও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এনবিআরের মাধ্যমে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে শুধু উৎপাদন বাড়ানোর জন্য।

আর চাহিদা কমানোর কথা বলা হয়েছে অর্থাৎ বাজেটের আকার কমানো হয়েছে। চলতি বাজেটের আকার জিডিপির ১৭.৭ শতাংশ ছিলো। প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃচ্ছ্রসাধন করা হবে। সরকারি পর্যায়ে এরই মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আগামী পহেলা জুলাইয়ের পর আরও কিছু পদক্ষেপ নেয়া হবে। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা হবে। প্রতিদিন জ্বালানি তেল কিনতে ৬৫ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে বিপিসি। সার ও গ্যাসে অনেক ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। এই ভর্তুকি তুলে নেয়া হলে হঠাৎ করে মূল্যস্ফীতি ৪ থেকে ৫ শতাংশ বেড়ে যাবে।

অর্থায়ন নিয়ে চিন্তা : সবকিছু ঠিক থাকার পরও আপনি ভর্তুকির টাকা সংগ্রহের চ্যালেঞ্জ মনে করছেন কেন। তাহলে আয় ও ঘাটতির অর্থায়ন ঠিকভাবে সংগ্রহ করা যাবে এমনটি মনে করছেন। এ প্রশ্নের জবাবে দিতে অর্থমন্ত্রী বলেন অর্থ সচিবকে। পরে অর্থ সচিব বলেন, ভর্তুকি ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৮২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, সার, গম ও সয়াবিনের মূল্য বেড়েছে। আজকের মূল্য ধরে ভর্তুকি নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মূল্য আরও বাড়লে ভর্তুকির টাকা বেশি প্রয়োজন হবে। ওই টাকা সংগ্রহ করাকে আমরা চ্যালেঞ্জ মনে করছি। ঘাটতি অর্থায়নে ব্যাংক ঋণ বেশি নিলে বেসরকারি উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা জানতে চাইলে অর্থ সচিব বলেন, ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এটি অর্থ সরবরাহের ৬ শতাংশ। বাকি ৯৪ শতাংশ বেসরকারি উদ্যোক্তারা নিতে পারবেন। মুদ্রানীতি ঘোষণার পর ২ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা বাজারে আসবে। এজন্য কোনো সমস্যা হবে না।

এ সময় আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চিকন চাল খাওয়ার প্রবণতা মানুষের আছে। এর মূল্য ৬৫ টাকা। মোটা চালের মূল্য গত দুমাসে বাড়েনি। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করছে। এদের সহায়তা করছে সরকার। সারের মূল্য চারগুণ বেড়েছে। এই সারগুলোতে ভর্তুকিতে ২৪ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এই ভর্তুকির মাধ্যমে সহায়তা কৃষক পাচ্ছে। এটি না দিলে উৎপাদন ও কৃষকের আয় কমত। তারা অর্থনৈতিকভাবে সংকটে পড়ত। এছাড়া মানুষের আয় বেড়েছে। যে কারণে মানুষ খাদ্যের পরিমাণও বাড়িয়েছে। তবে বলছি, বিদেশ থেকে খাদ্য কিনতে না পারলেও আমাদের সমস্যা হবে না। খাদ্যের জন্য হাহাকার পড়বে না। তিনি আরও বলেন, গমের দাম বৃদ্ধির কারণে চালের ওপর চাপ পড়েছে। এ জন্য চালের দাম বেড়েছে।

সামাজিক নিরাপত্তার বরাদ্দ কমিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন খাতে বাড়িয়েছেন, খাদ্য কর্মসূচিতে কমছে কেন-অর্থ সচিব বলেন, কোভিড শুরুর পর ১৫০টি, এরপর আরও দেড়শ উপজেলা নিয়ে আসছি শতভাগ সামাজিক নিরাপত্তার আওতায়। আরও ১৫০টি উপজেলাকে আনার প্রক্রিয়ায় আছে। এখানে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। গত বছর ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে দেয়া আছে। এ বছর ১ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। এ খাতে ৬ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। প্রতিবছরই বাড়ছে। খাদ্য নিরাপত্তায় ওএমএস সাড়ে ৪ লাখ টন দেয়া হচ্ছে। কোভিডের সময় ১ লাখ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এবারও বাড়বে। খাদ্য ভর্তুকিও বেড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিসহ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

Comments (0)
Add Comment