সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা

স্টাফ রিপোর্টার: বেলা বাড়তেই ছাড়া ছাড়া সেই মেঘ ও বৃষ্টির আমেজ নিমেষে মিলিয়ে গিয়ে খটখটে রোদের দাপট। দিনভর ওই খরতাপের কারণে রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে শরতের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে তিন থেকে চার ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা ছিলো।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে দেশের বেশির ভাগ এলাকার তাপমাত্রা কমতে থাকে। এ সময় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। কিন্তু গতকাল রোববার দেশের বেশির ভাগ এলাকায় তা ৩২ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ছিলো। এর মধ্যে তেঁতুলিয়া ছিলো দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা তাপদাহের কাছাকাছি তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন ছিলো ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো রাঙ্গামাটিতে ২৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই খরতাপের মধ্যে জীবনের প্রয়োজনে যাদের বাইরে বের হতে হয়েছে, তাদের প্রচ- গরম সহ্য করতে হয়েছে। ঘরের মধ্যে যারা ছিলো, তারাও স্বস্তিতে ছিলো না। দিনভর ভ্যাপসা গরমের মধ্যে সময় কাটাতে হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মৌসুমি বায়ুর প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়েছে। যে কারণে আকাশে মেঘ কমে গেছে, ফলে বৃষ্টিও কমেছে। ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী ছাড়া দেশের বেশির ভাগ এলাকা এ কারণে গতকাল রোববার ছিলো বৃষ্টিহীন। আগামী কয়েক দিন একই ধরনের আবহাওয়া থাকতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। দেশের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টি হলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হবে না।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হওয়ার পর বৃষ্টি কিছুটা বাড়তে পারে। তার আগের কয়েক দিন রোদের দাপট বেশি থাকতে পারে।
এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, এখন বর্ষার শেষ সময় চলছে। ফলে পর্যায়ক্রমে বৃষ্টি কমে আসছে। তবে মৌসুমি বায়ু বিদায় নিতে আরও সময় লাগবে। ফলে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি ও বাকি সময় রোদের মধ্য দিয়ে যাবে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের চলতি মাসের জন্য দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। এর মধ্যে একটি বর্ষাকালীন নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। গত আগস্ট মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। যদিও এর আগের চার মাস বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিলো। চলতি মাসের বেশির ভাগ সময়জুড়ে দেশের কোথাও না কোথাও বন্যার পানি থাকতে পারে। এদিকে সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, দেশের ১৩টি জেলায় এখন বন্যা চলছে। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে গঙ্গা ও পদ্মার পানি বাড়ছে। এর ফলে দেশের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও মানিকগঞ্জে বন্যার পানি কমতে পারে। মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ি ও শরীয়তপুরে বন্যার পানি বাড়তে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, গঙ্গা ও পদ্মার পানি বাড়তে থাকায় দেশের মধ্যাঞ্চলে নদীভাঙন তীব্রতর হবে। ফলে সে অনুযায়ী সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

Comments (0)
Add Comment