খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ চার শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি সর্বমোট ৪৪ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তাদের এ সাজা দেওয়া হয়। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৯তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান ভূঞা। তবে সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি বন্ধ এবং শিক্ষক মৃত্যুর ঘটনায় মামলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
গতকাল বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সিন্ডিকেট সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ও কুয়েট ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন। এর আগে সকাল ৯টা থেকে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়। এতে শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় ৪৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন এবং ৪৪ শিক্ষার্থীর শোকজের জবাব নিয়ে আলোচনা এবং সিন্ডিকেট সভায় বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় এটি মুলতবি ঘোষণা করা হয়েছিল।
অভিযোগ ওঠে, দাপ্তরিক কক্ষে কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কিছু সাধারণ ছাত্র ড. সেলিমকে আটকে রাখে। সেখানে মানসিক নির্যাতন করায় সেই অধ্যাপকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে দুই দফায় কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ২৮ ডিসেম্বর তদন্ত কমিটি শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে ৪৮ পৃষ্ঠার রিপোর্ট ভিসির কাছে জমা দেন। কমিটি ৩ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্ত করেন। এ সময় শিক্ষকের পরিবারের ৪ জন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ জন শিক্ষক, ৬৫ জন শিক্ষার্থী, ১৭ জন কর্মকর্তাসহ মোট ১২৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গেল ২৮ ডিসেম্বর তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর ৩০ ডিসেম্বর কুয়েটের ৪৪ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। যার জবাব দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৩ জানুয়ারি বিকাল ৫টা।
আজীবন বহিষ্কার হলেন ৪ শিক্ষার্থী : ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ’১৩ ব্যাচের ছাত্র সাদমান নাহিয়ান সিজান (১৩০৭০২৪), মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ’১৬ ব্যাচের ছাত্র হাসান আব্দুল কাইয়ুম (১৬০৫০৩৫), মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ’১৬ ব্যাচের ছাত্র মোহাম্মদ কামরুজ্জামান রাজ্জাক (১৬০৫০৩৯) এবং কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ’১৬ ব্যাচের রিয়াজ খান নিলয়কে (১৬০৭০৭৫)।

Comments (0)
Add Comment