শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরোদমে ক্লাস শুরু আজ

স্টাফ রিপোর্টার:

দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আজ থেকে পুরোদমে ক্লাস শুরু হচ্ছে। দীর্ঘ দু’বছর পর ¯^াভাবিক নিয়মে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান শুরু হবে। সীমিত পরিসরে আর ক্লাস হবে না। সব বিষয়ের ক্লাস শুরু হবে আজ থেকে। করোনার কারনে পুরো দুই বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ ছুটি আর সীমিত আকারে বা অনলাইনে ক্লাস হয়েছিল। এতে শিক্ষার্থীরা অনেকটাই গৃহবন্দি দশা কেটেছে। আজ থেকে পুরো হাফ ছেড়ে বের হবে সব শিক্ষার্থী। আজ থেকে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক সময়ের মতোই শতভাগ ক্লাস ও পরীক্ষা শুরুর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। ২০২০ সালে ১৬ মার্চ দেশে করোনায় মৃত্যুর প্রথ ঘটনার পর ১৭ মার্চ দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। প্রায় ১৮ মাস পর ২০২০ সালে ১২ সেপ্টেম্বর সীমিত আকারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি ফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হওয়ায় একমাস পর ২২ ফেব্রæয়ারি শুধু মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি ক্লাস চালু করা হয়। এরপর ২ মার্চ সীমিত আকারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান শুরু হয়। সর্ব শেষে আজ থেকে প্রাক-প্রাথমিকেরও ক্লাস শুরু হবে। গতকাল পর্যন্ত এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছাড়া অন্য শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন স্কুলে যেতে পারছিল না। অনলাইনে ক্লাস চালু থাকলেও সব শিক্ষার্থী সে ক্লাস অনুসরণ করতে পারেনি। রাজধানীর বাইরের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাসে যুক্ত হতে পারছিল না। করোনাকালে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, সারাদেশের মাত্র ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইনে যুক্ত হতে পেরেছিলো। এছাড়া হাওড় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বলা যায় প্রায় দু’বছর ক্লাসের বাইরে ছিলো। বর্তমানে সারাদেশে করোনার দুই শতাংশের নিচে নেমে আসায় এবং পরিস্থিতি অনেকটাই স্বভাবিক হয়ে ওঠায় গত শনিবার একটি বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব বিষয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ১৫ মার্চ থেকে শুরু হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পুরোদমে ক্লাস শুরুর ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধক ছিল ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থীকে দুই ডোজ টিকার আওতায় আনা। সারাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীর সংখ্যা হচ্ছে এক কোটি ৩৯ লাখ ৬৩ হাজার ৯৫ জন। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বলছে, ১৩ মার্চের তথ্য অনুযায়ী তাদের মধ্যে এক কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজারকে দ্বিতীয় ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। আর প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে এক কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার ২৩ জনকে। অর্থাৎ প্রায় ৯৮ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ আর ৮২ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, প্রথম ডোজের পর দ্বিতীয় ডোজের মধ্যে একটি সময়ের পার্থক্য থাকতে হয়। এটা মানতে গিয়ে সবাইকে দ্রুত টিকা দেয়া যাচ্ছে না। তবে যারা টিকা পাচ্ছে তারা নিয়মিত ক্লাস করবে। পাশাপাশি অনলাইন ও দ‚রশিক্ষণের ব্যবস্থাও চালু থাকছে। এদিকে আসন্ন পবিত্র রমজানের ছুটি কাটছাঁট করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোর মতো প্রথম রমজান থেকেই স্কুল বন্ধ হচ্ছে না। এ বছর ২০ রমজান পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান এবং পরীক্ষা ¯^াভাবিক নিয়মে চলবে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, করেনায় শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এছাড়া বিকল্প নেই। ক্লাসের পাশাপাশি অনলাইনেও পাঠদান অব্যাহত থাকবে।

Comments (0)
Add Comment