স্টাফ রিপোর্টার:পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সারা খান। অভিনয় নিয়ে প্রায়ই আলোচনায় থাকলেও এবার গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন ভিন্ন কারণে। ফেমিনিজম নিয়ে সারা খান বলেন, তিনি ‘আজকের ফেমিনিজম’কে সমর্থন করেন না। আর তার এই মন্তব্যের কারণেই পড়েছেন সমালোচনার মুখে। আর এ নিয়ে তিনি পরিষ্কার ব্যাখাও দিয়েছেন।
সম্প্রতি ‘শের’ অভিনেত্রী কয়েক সপ্তাহ আগে একটি ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি বড় ধরনের ফেমিনিস্ট নই। ’
তিনি আরও জানান, অনেকের দৃষ্টিভঙ্গি পশ্চাদমুখী বলে মনে করেন, যার মধ্যে রয়েছে ‘পুরুষদের সেই স্থান দেওয়া উচিত যা তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে যাতে নারীরা শান্তিতে থকতে পারে।
তার মন্তব্য ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়, অনেকে তার বিরুদ্ধে নারীবাদী আন্দোলনকে অবমূল্যায়ন করার অভিযোগ তুলেন। রাজনৈতিক ভাষ্যকার রেহাম খানও সারা খানের কঠোর সমালোচনা করেন।
ব্যাপক সমালোচনার মুখে সম্প্রতি শেয়ার করা একটি বিস্তারিত ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে নিজের সেই বক্তব্যের পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিয়েছেন শারা খান। তিনি বলেন, ‘যখন আমি বলি যে আমি ফেমিনিস্ট নই, তার অর্থ এই নয় যে আমি সমতায় বিশ্বাস করি না। আমি নারীদের জন্য সমান সম্মান, সমান অধিকার এবং সমান সুযোগে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করি। ’
সারা বলেন, ‘আমি একজন সত্যিকারের, প্রকৃত ফেমিনিস্ট – যিনি বিশ্বাস করেন যে একজন নারীর শক্তি পুরুষদের অনুকরণে নয় বরং তার আল্লাহপ্রদত্ত নারীত্বকে আলিঙ্গন করার মধ্যে নিহিত। ’
তিনি বলেন, নারীদের ‘রাণীর মতো’ সম্মান করা উচিত। তাদের কাছ থেকে যন্ত্রের মতো কাজ করার আশা করা উচিত নয়। নারীদের যন্ত্রের মতো কাজ করার জন্য তৈরি করা হয়নি। আমাদের ঘর তৈরি করার, সন্তান লালন-পালন করার এবং মর্যাদার সঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর স্ত্রী হযরত খাদিজা (রা.)-এর কথা উল্লেখ করে সারা বলেন, তিনি ভারসাম্যের একটি রোল মডেল, যিনি ব্যবসায় সফল কিন্তু তিনি তার বিশ্বাস ও পরিবারের সঙ্গেও গভীরভাবে জড়িত। তার কাজ করার অধিকার ছিল, এবং আমাদেরও। কিন্তু বাইরের জগতের বৈধতার আড়ালে তিনি কখনও তার পরিচয় হারাননি।’
আধুনিক সামাজিক মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সারা বলেন, কেন একজন নারীর অফিসে যাওয়াকে সম্মানজনক বলে মনে করা হয়, যেখানে সন্তান লালন-পালন করা বা স্বামীর জন্য নাস্তা তৈরি করাকে নিকৃষ্ট বলে দেখা হয়। কখন থেকে একজন অনুগত স্ত্রী বা মা হওয়া নিকৃষ্ট হয়ে উঠেছে?’
‘একজন নারী শিক্ষিত, সাহসী এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী হতে পারেন—আবার কোমল, মর্যাদাপূর্ণ এবং মূলবানও হতে পারেন। তাকে এর মধ্যে একটি বেছে নিতে হয় না; তিনি নিজেই তার জীবনের ভারসাম্য নির্ধারণ করতে পারেন। ‘
তিনি আরও বলেন, ‘ফেমিনিজম নারীর পছন্দকে সম্মান করার বিষয়ে হওয়া উচিত। নারীবাদের অর্থ নারীত্বকে ত্যাগ করা-হওয়া উচিত নয়… এটি একটি ঐশ্বরিক শক্তি। এমন কিছু শক্তির ধারণার সঙ্গে এটি বিনিময় করবেন না যা আমাদের প্রকৃত পরিচয় থেকে দূরে নিয়ে যায়।