গিলগিটের ঐতিহ্য ফুটে উঠল হাসান-রহিমের বিয়েতে

স্টাফ রিপোর্টার:গান ও সঙ্গীতের জন্য পরিচিত ২৬ বছর বয়সি গায়ক-গীতিকার হাসান রহিমের বিয়ের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে। এটি কেবল ব্যক্তিগত আনন্দই নয়, বরং গিলগিট-বাল্টিস্তানের (জি-বি) সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে দেশের দর্শকের সামনে তুলে ধরেছে।

আগস্টে অনুষ্ঠিত রহিমের বিয়েতে তিনি গিলগিতের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে উপস্থিত হয়েছিলেন, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিবিসি এশিয়ান নেটওয়ার্কের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে হাসান রহিম তার অভিজ্ঞতা নিয়ে হাস্যরস ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। বিশেষ করে তার মা তাকে বিয়ের দিনে ঐতিহ্যকেন্দ্রিক পোশাক ও চলনের জন্য উৎসাহিত করেছিলেন।

বিয়ের অন্যতম আকর্ষণ ছিল রহিমের প্রাণবন্ত নাচ। তিনি বললেন, ‘প্রায় প্রতি পাঁচ মিনিটে সবাই আমাকে নাচ দেখাতে টানতো। আমি বলেছিলাম, দেখাবো কিভাবে নাচ করা হয়।’ তার নাচের প্রতিটি পদক্ষেপই গিলগিটের সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত ছিল।

রহিম স্বীকার করেছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে প্রশংসা পেলেন তা তার আশা ছিল না। বন্ধুদের সঙ্গে মজা করে বলেছিলেন, ‘যদি সঙ্গীত না হয়, তবে আমরা এখন বিয়ের নাচের কোরিওগ্রাফার।’

হাসান রহিমের পোশাকও নজর কেড়েছে। তার ‘শুক্কা’ ওভারকোট—যা মাতৃপক্ষের দাদা থেকে পিতাকে এবং তারপর তাকে উত্তরাধিকার হিসেবে এসেছে—ক্লাসিক ‘পাকোল’ টুপি নিয়ে মিলিত হয়ে সাংস্কৃতিক গর্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে। রহিম বললেন, ‘আমি ভাবিনি যে সবাই এটিকে এতো ভালোবাসবে, কিন্তু ভালোবাসার ঢেউ ছিল অভাবনীয়।’

বিয়ের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে হাসান রহিম ও তার নববধূর মধ্যে স্নেহপূর্ণ মুহূর্তগুলো নিয়েও আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে কিছু দ্বিধা ছিল। এমনকি তার মা মোবাইল ফোন নিয়ে নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেটা উপেক্ষা করেছেন। তিনি বললেন, ‘আমি এত আনন্দিত ছিলাম যে এমন জিনিস নিয়ে মাথা ঘামাতে পারিনি।’

রহিমের আত্মীয়-স্বজনও ভিডিও শুটিংয়ে ব্যস্ত হয়ে ছিলেন। তিনি হেসে বললেন, ‘আমার চাচাতো ভাই ও বোনেরা ছয়দিনের জন্য ইনফ্লুয়েন্সার হয়ে গিয়েছিল। আমার বিয়েকে কনটেন্ট বানানোর জন্য আমি হয়তো চার্জ নিতে পারতাম।’

ফলে, একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান হয়ে উঠেছে জাতীয় আলোচনা বিষয়। শুধু হাসান রহিমের গায়ক ও তারকা পরিচয়ই নয়, গিলগিট-বাল্টিস্তানের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও দেশের মানুষ দেখেছে।