প্রেমিককে বিয়ে করবেন কিনা, প্রশ্নে যে উত্তর দিলেন জয়া

দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের বৃহস্পতি তুঙ্গে। সম্প্রতি কলকাতায় তার দুটি সিনেমা ‘ডিয়ার মা’ ও ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ মুক্তি পেয়েছে।দুটি সিনেমাই বেশ সাড়া ফেলেছে।

ক্যারিয়ারে ফোকাস করায় ব্যক্তিগত জীবনটা এতোদিন আলেখ্যেই রেখেছিলেন জয়া। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত জীবন আড়াল করতে পারেননি।

সদ্য মুক্তি পাওয়া সিনেমার প্রচারের মাঝেই ইনডালজ এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেম নিয়ে দীর্ঘ নীরবতা ভাঙলেন অভিনেত্রী। জানিয়েছেন তিনি ফের প্রেমে পড়েছেন।

বিয়ে প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে অভিনেত্রী বলেন, বিয়ে করে একসঙ্গে থাকার বিষয়টাকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু এখনই তেমন ইচ্ছা বা পরিকল্পনা নেই।এ মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত নেই। বিয়ে নিয়ে আমার মধ্যে কিছুটা ভয়ও আছে, হয়তো আগের অভিজ্ঞতার কারণে বলেও জানান জয়া আহসান।

এরপর সঞ্চালক জানতে চান, ‘তাহলে কি আপনি বিয়ের জন্য তৈরি নন?’ জয়া বলেন, এটা আসলে তৈরি হওয়ার ব্যাপার নয়। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমার আসলে একটা ভীতি আছে, একটা ভয় কাজ করে।’

জয়া ১৯৯৮ সালে অভিনেতা ফয়সাল আহসানকে বিয়ে করেছিলেন। তখন তিনি ছিলেন জয়া মাসুদ। ভালোবেসে ফয়সালকে বিয়ের পর নিজের নামের পাশে জুড়েছিলেন স্বামীর পদবি। একসঙ্গে বেশ কিছু নাটকে অভিনয়ও করেছেন জয়া-ফয়সাল। ২০১১ সালে দীর্ঘ ১৩ বছরের দাম্পত্যে ইতি টানেন দুজনে। বিচ্ছেদের আগুনে পুড়লেও প্রকাশ্যে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তেমন কথা বলেন না জয়া আহসান।

কেন ভেঙেছিল জয়া-ফয়সালের বিয়ে? সে কথা স্পষ্ট করে জানাননি দুজনেই। তবে সাবেক স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা আজও অটুট জয়ার মনে। তাই হয়তো নিজের নামের পাশ থেকে সাবেক পদবি আজও মুছে ফেলেননি জয়া। কিন্তু কেন ডিভোর্সের পথে হেঁটেছিলেন?

ফয়সালের সঙ্গে ভাঙা দাম্পত্য নিয়ে ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনকে কিছু আগে অভিনেত্রী বলেন, ‘উত্থান-পতন প্রত্যেক মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটা যুদ্ধের মতো। সেই সময়ে আমার মানসিক ধারণাটাই পরিবর্তন হয়ে গেল। আমি পুরোপুরিভাবে কাজের দিকে দৃষ্টি ঘোরাই। সাধারণত সেই সময়ে মেয়েরা অনেক কিছু থেকেই বিচ্যুত হয়ে পড়ে। এমনকি ফোকাস থেকেও সরে যায়।’

জয়া আরও বলেন, ‘কিন্তু আমার কাজ আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছে। যে কারণে আমি কাজকেই ভালোবেসেছি। আমি কখনই কাজ থেকে দূরে সরে থাকিনি। আমি আমার এই যাত্রাকে ভালোবাসি। এর মধ্য দিয়েই মানুষ আমার প্রশংসা করেন। আমি কাজকেই সম্মান করি।’

নতুন প্রেম নিয়ে জয়া আহসান বলেন, হ্যাঁ, আমার জীবনে একজন আছে। আমরা বহু বছর ধরে একসঙ্গে আছি। তবে উনি মিডিয়া জগতের কেউ নয়। তিনি বলেন, আমার কাছে পার্টনার হওয়ার আগে বন্ধু হওয়াটা সবচেয়ে বেশি জরুরি। আজীবন সেই বন্ধুত্ব ধরে রাখতে পারাই আসল ব্যাপার। আর আমি অনেক ভ্রমণ করি, দীর্ঘ সময় শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকি, তবু সে কোনো অভিযোগ করে না। বরং সবসময় সমর্থন দেয়। এ মানসিকতা বিরল বলে জানান অভিনেত্রী।

জয়া আহসান বলেন, আমরা দুজনেই ব্যক্তিগত জীবনকে আড়ালে রাখতে পছন্দ করি। সে শান্ত স্বভাব ও ব্যক্তিগত পরিসরকে গুরুত্ব দেয়। সব কিছু মিলেই সম্পর্ককে দৃঢ় করছি।

তবে সিনেমার কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়াবেন না, এটা তাঁর সচেতন সিদ্ধান্ত ছিল না। হয়ে গেছে।

সঙ্গীর কোন একটা বিষয় পছন্দ করেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে জয়া বলেন, ‘সে অনেক শান্ত।’ সঞ্চালক তখন বলেন, ‘আপনিও তো খুব শান্ত।’ জয়া তখন বলেন, ‘হ্যাঁ, সে জন্যই হয়তো আমি তাঁকে পছন্দ করেছি।’