চুয়াডাঙ্গায় টানা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত : আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই প্রচ- রোদে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষক : মেহেরপুরে তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরসহ সারাদেশে বেড়েই চলছে তাপপ্রবাহ। প্রচন্ড গরমে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম স্থবিরতা। বাড়ছে রোগব্যাধি। চলমান তাপপ্রবাহ দীর্ঘ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। কয়েক দিনের মৃদু, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহের পর গতকাল শনিবার জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা চারদিকে, কোথাও স্বস্তি নেই। এমন পরিস্থিতিতে কোনো সুখবর দিতে পারেননি আবহাওয়াবিদেরা। তারা বলছেন, আগামীকাল তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রচ- রোদে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষক। এছাড়া জেলায় বিভিন্ন সড়কের রাস্তার পিচ গলে যেতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার বেলা ৩টায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ২৩ শতাংশ। আবহাওয়া বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, চলতি মরসুমে এখন পর্যন্ত এটিই সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শুক্রবার ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। ওই দুই দিনও সারা দেশের মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় ছিলো সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। গরমে লোকজন অনেকটাই ঘরবন্দী হয়ে পড়লেও খেটে খাওয়া মানুষের নিস্তার নেই। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর মহাসড়ক ঘেঁষে সদর উপজেলার দৌলাতদিয়াড়ে বিএডিসির শস্য গুদাম এবং হাতিকাটা, আলুকদিয়া ও ভালাইপুরে গড়ে ওঠা খাদ্যশস্যের অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হাজারো শ্রমিক কর্মরত আছেন। তারা প্রচ- রোদের মধ্যেই দিনভর হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আজ শনিবার দুপুরে হাতিকাটা গ্রামে এনামুল হকের খাদ্যগুদাম সংলগ্ন চাতালে ১৪জন শ্রমিককে ধান শুকাতে ও বস্তা ভর্তি করে গুদামজাত করতে দেখা গেল। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তারা সঙ্গে থাকা বোতল থেকে পানি খাচ্ছিলেন, আবার কেউ খানিক দূরের নলকূপ থেকে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে আসছিলেন। কথা হয় শ্রমিক সরদার ৫৫ বছর বয়সী মিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। ৩০ বছর ধরে শ্রমিকের কাজ করা মিরাজুল বলেন, ‘সূয্যুর তাপে গা-ডা পুড়ে যাচ্চে। সেদিক দেকতি গেলি তো সুংসার চলবে নারে বাবা।’ আলুকদিয়া এলাকায় একটি গুদামের চাতালে বিপুলসংখ্যক শ্রমিককে শুকানো ধান বস্তায় ভর্তি করতে দেখা গেল। আলাপকালে শ্রমিকেরা জানান, এক বস্তা ধান (৫০ কেজি) গুদাম থেকে বের করে রোদে দেওয়া, শুকানো এবং শুকানোর পর বস্তায় ভর্তি করে গুদামে সাজালে বস্তাপ্রতি ১৮ টাকা করে পেয়ে থাকেন। শ্রমিক রিংকু মিয়া বলেন, ‘গরিপ হয়ে জন্মায়চি, কাজ কইরেই খাতি হবে। এই কাজের ওপরই আমার পাঁচ জুনের সুংসার। রোদির জন্নি তো বাড়িত বইসে থাকলি সুংসার চলবে না।’ অন্যান্য শ্রমিকদের বক্তব্যও একই রকমের। স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, সকাল থেকেই আকাশ মেঘমুক্ত-পরিষ্কার। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই এবং পশ্চিম থেকে গরম হাওয়া প্রবেশ করায় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। তাপপ্রবাহের রেকর্ড ভেঙেছে। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। পরশু থেকে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও তাপপ্রবাহ আরও কয়েকস দিন অব্যাহত থাকবে। পশ্চিমা লঘুচাপ নিষ্ক্রিয় থাকা এবং জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে চলমান অস্বস্তিকর অবস্থা আরও কয়েক দিন থাকবে। এই লঘুচাপ সক্রিয় হলেই স্বস্তি ফিরে আসবে।’ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। ২০০২ সাল থেকে চলতি মৌসুম পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল গত বছরের ৩০ এপ্রিল। এদিন রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালের ২১ মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৪ বছরের রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সবচেয়ে বেশি রেকর্ড এপ্রিল মাসে, ১৪ বার। এ ছাড়া, মে মাসে ছয় ও জুন মাসে চারবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে. বিরামহীনভাবে তীব্র তাপপ্রবাহে কবলে পড়ে চুয়াডাঙ্গাবাসীর জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে জীবননগর উপজেলারবাসীর অবস্থা আরো ত্রাহি। কারণ আর্ন্তজাতিক কর্কটক্রান্তি রেখা এ জেলার জীবননগর উপজেলার উপর দিয়ে যাওয়ার কারণে শীতকালে তীব্র শীত এবং গ্রীষ্মকালে তীব্র গরম অনুভূত হয়। যে কারণে চুয়াডাঙ্গা সদরের থেকে জীবননগর উপজেলায় গরমের তীব্রতা আরো বেশি। গতকাল শনিবার বেলা ৩টার সময় চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৩ শতাংশ। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু ও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে চলছে অতিমাত্রায় তাপপ্রবাহ। গত শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর পূর্বে বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াদি জামিনুর রহমান। গত কয়েক দিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলার উপর দিয়ে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপদাহ বয়ে চলেছে। রোদ্রের তীব্রতায় সড়কের পিচ গলে যাচ্ছে এবং খাল-বিলের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। তীব্র গরমের কারণে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও হাঁস-ফাঁস করছে। গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। রোজগারের তাগিদে তাদের দাবদাহ উপেক্ষা করে রাস্তায় নামতে হচ্ছে। উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি শফিকুল ইসলাম বলেন, তীব্র গরমের কারণে কাজ করা যাচ্ছে না। ফলে আজ কাজে যায়নি। উপজেলার নতুন তেঁতুলিয়া গ্রামের অটো ভ্যানচালক ঝন্টু মিয়া জানান, তীব্র রোদ গরম উপেক্ষা করে যাত্রীর আশায় রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরছি; কিন্ত রাস্তায় তেমন মানুষ না থাকায় ভাড়া হচ্ছে না। অস্বাভাবিক গরমে শুধু শ্রমজীবী নয়, শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থরাও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে হিটস্ট্রোক, পানিশূন্যতা ও ঘামজনিত সমস্যার রোগী বাড়ছে বলেও জানা গেছে। চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম জানান, তীব্র গরমে ডায়ারিয়া, শ^সাকষ্ট ও শিশুরা নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেশি।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুর জেলার উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। মেহেরপুরের প্রতিবেশী জেলা চুয়াডাঙ্গা জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত শুক্রবার চলতি মরসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অতি তীব্র তাপপ্রহাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিরুপ প্রভাব পড়েছে ফসলের ক্ষেতে। প্রচ- তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি নেমে এসেছে। চরম গরম অনুভূত হওয়ায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। সাধারণ মানুষ ছাতা মাথায় অথবা রিকশায় চলাচল করছেন। এই গরমে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে তাঁরা মাথায় ক্যাপ অথবা গামছা পরে চলাচল করছেন। আর কৃষি শ্রমিকেরা বাঁশের তৈরি মাথাল মাথায় দিয়ে খেতে কাজ করছেন। তবে একটু পরপরই অনেককেই ক্লান্ত দেহ নিয়ে ছায়ায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। গাংনী শহরের নসিলা ড্রাগ হাউজের সামনে জুতা বিক্রি করেন কাজল। কাঠফাটা রোদের মধ্যেই গতকাল দুপুরে ফুটপাতে চট বিছিয়ে তাকে ক্রেতার অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। মাথায় একটি গামছা দিয়ে বসলেও সমানে ঘামছিলেন। আলাপকালে সোহরাব বলেন, ‘জুতা বিক্রি করে ৫ সদস্যের সংসার চালাতে হয়। আজ খুবই গরমের দাপট। মনে হচ্ছে গরমে গা পুড়ে যাবে। মন বলছে না বসে থাকতে তারপরও পেটতো আর শোনে না। হেমায়েতপুর বাজারের ভ্যানচালক ফয়সাল জানান, গত তিন দিন বেশি গরম পড়ছে। তিন চারটে পুশ্যি ভ্যান না চালালি চলবে না তাই রোদের মধ্যে যাত্রির জন্য দাড়িয়ে থাকা। রোদে বের হলে অসুখ হবে তার পরও বের হতে হবে। শরীরের কথা ভাবার সময় নেই তার। একই কথা জানালেন দিনমজুর রফিকুল আর রাইহান। এদের বাড়ি গাংনীর জালশুকা গ্রামে। ধান কাটার জন্য এসেছেন রাইপুর মাঠে। প্রচ- তাপপ্রবাহের কবলে যারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন তাদের অনেকের ছাতা ব্যবহার করতে দেখা গেছে। তবে ফসলে মাঠে বিরুপ প্রভাবে ফলন বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। প্রচ- গরম আর রোদে মাঠে দাঁড়াতে পারছেন না কৃষকরা। যদিও বোরো ধান কাটা মাড়াই চলছে তবে পাট সহ গ্রীস্মকালীন সবজি ও আউশ ধান আবাদে সেচ খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে প্রচ- তাপ প্রবাহে তৃষ্ণা মেটাতে অনেকেই রাস্তার পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি শরবত পান করছেন অথবা গরম তরমুজ খাচ্ছেন। এতে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন পেটের পীড়ায়। গত দুই দিনে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন ১০৮জন। এদের মধ্যে অধিকাংশই ডাইরিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত। বিশেষ করে শিশুরা আক্রান্ত হয়েছে ডাইরিয়ায়। আর বৃদ্ধরা ভর্তি রয়েছেন শ্বাস কষ্ট রোগে। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৩ মার্চ থেকে এ অঞ্চলে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। ওই দিন জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৭ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস। পর্যায়ক্রমে ১৬ মার্চ ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৭ মার্চ ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৮ মার্চ ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৯ মার্চ ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩০ মার্চ ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১ এপ্রিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এভাবে ৩ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৫ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৩ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৪ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৫ এপ্রিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৬ এগ্রিল ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, চলতি মাসের ৭ মে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ৮ মে ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদেরা জানান, ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। সে হিসাবে চলতি মরসুমে জেলায় ১৮ দিন ধরে তাপপ্রবাহ চলছে। এর মধ্যে ১২ দিন মৃদু, ৫ দিন মাঝারি এবং এক দিন তাপমাত্রা তীব্র তাপপ্রবাহের অঙ্ক ছুঁয়েছে জেলায়। স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, সকাল থেকেই আকাশ মেঘমুক্ত পরিষ্কার, কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। পশ্চিম থেকে গরম হাওয়া প্রবেশ করায় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। আগামী দুই দিন তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি অব্যাহত থাকবে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুপ্রভা রাণী জানান, তাপ প্রবাহ চলাকালে প্রয়োজনীয় কাজ দিনের প্রথমার্ধে সেরে নিতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হওয়াই ভালো। প্রত্যেককেই পানিসহ বেশি বেশি তরল খাবার ও ফলমূল খেতে হবে। ভাজাপোড়া ও চা-কফি এড়িয়ে চলতে হবে। গরমজনিত রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে।