স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ‘দীর্ঘদনি ধরে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রভাষক সাজিদ হাসানকে ধরিয়ে দিয়েছেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী। ঢাকার নবীননগর এলাকা থেকে র্যাবের একটি দল তাকে গ্রেফতার করে দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। দামুড়হুদা মডেল থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার ওই শিক্ষককে পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দামুড়হুদার আমলী আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালতের বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা কামাল তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এর আগে পরশু সোমবার দুপুরে ঢাকার নবীননগর থেকে র্যাব তাকে গ্রেফতার করে। ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, ধর্ষণের মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত প্রভাষক সাজিদ হাসান আত্মগোপনে চলে যান এবং মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। এতে তিনি (ভুক্তভোগী) নমনীয় না হলে নতুন করে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আপোষের চেষ্টা করেন। দিনের পর দিন গ্রেফতার এড়িয়ে চলায় র্যাবের-১২ মেহেরপুরের গাংনী ক্যাম্প সহযোগিতার হাত বাড়ায়। এবং অভিযান সফল হয়। ওই ছাত্রী বলেন,‘ গাংনী ক্যাম্পের সহযোগিতায় ঢাকার আশুলিয়া এলাকার র্যাবের একটি চৌকস দল আমাকে দিয়ে কৌশলে সাজিদ হাসানকে ঢাকার নবীনগরে ডাকিয়ে নেন। সোমবার দুপুরে নবীনগরের সেনা শপিং কমপ্লেক্সে একটি ফার্স্ট ফুডের দোকানে উপস্থিত হলে র্যাব তাকে গ্রেফতার করে। এরপর গতকাল মঙ্গলবার দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করে। ‘সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলা সদরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রভাষক সাজিদ হাসানের বিরুদ্ধে গত ২৫ এপ্রিল ভুক্তভোগী এক কলেজছাত্রী (১৮) দামুড়হুদা মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এজাহারে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তাকে ‘দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলো বলে অভিযোগ করা হয়। সহকর্মীদের ভাষ্যমতে প্রভাষক সাজিদ হাসান বিবাহিত। তাঁর ৯ ও ৬ বছর বয়সী দুটি মেয়ে আছে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কখনো দামুড়হুদা,কখনো দর্শনায় বসবাস করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি দামুড়হুদা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়ান। ভুক্তভোগী ছাত্রীর দাবী ২০২০ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় সাজিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এইচএসসি পাসের পর বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এ সময়ের মধ্যে বিয়ের কথা বলে সাজিদ হাসান তাকে (ওই ছাত্রীকে) একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ছাত্রী বিয়ের কথা বললে তিনি নানা টালবাহানা করে এড়িয়ে যান। এদিকে থানায় মামলার খবর জানাজানি হলে অভিযুক্ত প্রভাষক সাজিদ হাসান আত্মগোপনে চলে যান। অভিযুক্ত প্রভাষকের বিষয়ে করণীয় বিষয়ে ঠিক করতে পরদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জরুরি বৈঠক আহ্বান করে। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্রর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেই সাথে ঘটনা তদন্তে দামুড়হুদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জিয়াউল হককে প্রধান করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। জিয়াউল হক জানান, ১৫ মে তিনি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।