‘আমি আমার দেশকে ভালোবাসি, কিন্তু আমি এ মুহূর্তে এটা চিনতে পারছি না’- মার্কিন রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সম্প্রতি এমনটাই বলেছেন হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে উত্তর স্পেনে শুরু হয়েছে সান সেবাস্তিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। সেখানে অভিনেত্রী তার নতুন সিনেমা ‘কাউচার’-এর জন্য এক সংবাদ সম্মেলনে তার জন্মভূমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক দৃশ্যপট নিয়ে কথা বলেন। ‘এখন খুব, খুব কঠিন সময়’-অস্কারজয়ী অভিনেত্রী তার নতুন সিনেমার ইউরোপীয় প্রিমিয়ারের আগে সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন। তবে অভিনেত্রী স্বীকার করেছেন যে, তিনি এ বিষয়ে কী বলেছেন সে সম্পর্কে সতর্ক থাকতে চান। সেখানে তাকে উপস্থাপক তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি এখন কোন পথে চলছে? উত্তরে জোলি বলেন, ‘এটি একটি খুব কঠিন প্রশ্ন। আমি অবশ্যই বলব, আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। তবে রাজনৈতিক কারণে আমার দেশকে আমি এখন চিনতে পারছি না এবং এ মুহূর্তে দেশে যা চলছে সেজন্য আমি আমার দেশকে স্বীকৃতি দিই না। আমি সব সময় আন্তর্জাতিকভাবে থাকতে চেয়েছি। আমার পরিবার আন্তর্জাতিক। আমার জীবন, আমার দৃষ্টি, সমান এবং ঐক্যবদ্ধ। যে কোনো কিছু যে কোনো জায়গায় যা ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি এবং স্বাধীনতাকে বিভক্ত করে বা সীমাবদ্ধ করে (কারও জন্য), আমার মনে হয় তা খুবই বিপজ্জনক।’ তিনি আরও বলেন। ‘আমি মনে করি এটি গুরুতর সময়। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যে, আমরা কিছু কথা এলোমেলোভাবে না বলি। তাই আমি সতর্ক থাকব। তবে এটি খুবই কঠিন সময়।’
‘কাউচার’ সিনেমায় জোলি ম্যাক্সিনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, একজন চল্লিশ বছর বয়সি আমেরিকান চলচ্চিত্র পরিচালক যিনি প্যারিস ফ্যাশন উইক শো-এর জন্য একটি ছোট কাজ করার দায়িত্ব পেয়েছেন। কাজ নিয়ে ব্যস্ততা যখন চরম পর্যায়ে তখন ম্যাক্সিনের স্তন ক্যানসার ধরা পড়ে। সিনেমাটিতে অভিনয় করা জোলির জন্য এমন একটি অভিজ্ঞতা ছিল, যা অভিনেত্রী ব্যক্তি জীবনেও উপলব্ধি করেছেন। কারণ তার পারিবারিক ক্যানসারের ইতিহাসের কারণে। ২০১৩ সালে জোলির একটি প্রতিরোধমূলক ডাবল মাস্টেকটমি হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমি এটা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কারণ খুব ছোটবেলায় আমার মা এবং দাদিকে হারিয়েছিলাম এবং আমার বিআরসিএ-১ জিন আছে। ঠিক এ কারণে সিনেমাটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
২০০৭ সালে ৫৬ বছর বয়সে ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে মারা যান জোলির মা। এ সিনেমায় জোলি তার মৃত মায়ের নেকলেস পরেছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার মা সম্পর্কে কথা বলা খুব কঠিন। আপনি আমার মাকে ভালোবাসবেন। আমি আমার মায়ের নেকলেস পরেছিলাম। কারণ, চরিত্রটির মধ্য দিয়ে আমি আমার মায়ের সেই ব্যথাটা অনুভব করতে চেয়েছিলাম।’ সিনেমাটিতে ম্যাক্সিনের জীবন কীভাবে আরও দুজনকে প্রভাবিত করেছে সেটাও তুলে ধরা হয়েছে। এদের একজন হচ্ছেন আদা, দক্ষিণ সুদানের একজন তরুণ মডেল (আনিয়ার আনেই) যিনি একটি কঠিন ভবিষ্যতের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে আরও তুচ্ছ পরিবেশে শেষ হন, এবং অন্যজন অ্যাঞ্জেল (এলা রাম্পফ), একজন ফরাসি মেকআপ শিল্পী যিনি একজন লেখক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। সিনেমায় গ্যারেল ম্যাক্সিনের চিত্রগ্রাহকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যার সঙ্গে তিনি সম্পর্ক গড়ে তোলেন।