মুসলমানদের নবীর আদর্শ চরিত্র অনুসরণ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, মুসলমানদের অবশ্যই নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুকরণীয় নেতৃত্ব ও চরিত্র অনুসরণ করতে হবে।

তিনি বলেন, নবীর জীবনযাপন জ্ঞান, দানশীলতা, করুণা এবং নৈতিক আচরণের সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত, যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক হতে হবে।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বন্দর বারু সেরি পেটালিং জামেক মসজিদে ফেডারেল টেরিটরি মুফতি বিভাগের আয়োজিত ‘তেমু মেসরা’ অনুষ্ঠানে ‘তাউসিয়াহ’ (অনানুষ্ঠানিক ইসলামিক বক্তৃতা) প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী দাতুক মোহাম্মদ নাঈম মোখতার এবং ফেডারেল টেরিটরিজ মুফতি আহমদ ফওয়াজ ফাদজিলও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম বিশ্বাস, জ্ঞান, সচেতনতা ও দানশীলতার উপর দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। নবী করিম (সা.)-এর ব্যক্তিত্ব ও নৈতিকতা মুসলমানদের জন্য পথপ্রদর্শক হওয়া উচিত। ইসলামকে সমুন্নত রাখার সংগ্রামও এই মূল্যবোধের ভিত্তিতে পরিচালিত হতে হবে।

তিনি সালাহউদ্দিন আল-আইয়ুবীর দৃষ্টান্ত টেনে বলেন, তার সময়ে জ্ঞান, সচেতনতা ও ঐক্যই মুসলমানদের শক্তির উৎস ছিল, যা শেষ পর্যন্ত জেরুজালেম পুনরুদ্ধারে করেছিল।

আনোয়ার আশা প্রকাশ করেন, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, দয়া ও করুণার নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত ‘মালয়েশিয়া মাদানী’ ধারণাটি দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা ও সামাজিক কাঠামোয় পূর্ণাঙ্গ রূপান্তর ঘটাবে।

তিনি বলেন, ইসলাম একটি সর্বব্যাপী জীবনব্যবস্থা, যা কেবল নির্দিষ্ট কিছু দিক বা আংশিকভাবে বোঝা যায় না। জাতি গঠনের ক্ষেত্রে অর্থনীতি, শিক্ষা, রাজনীতি ও সামাজিক কল্যাণসহ সব খাতকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, মালয়েশিয়া মাদানীর অধীনে মুসলিম শিক্ষার্থীদের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান গভীর করার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সহায়ক হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মালয়েশিয়া মাদানী ধারণাটি ন্যায়বিচার ও করুণার ভিত্তিতে গড়ে উঠবে, যা প্রতিটি নাগরিকের কল্যাণ নিশ্চিত করবে।

তিনি জানান, সরকারি কর্মচারীদের ভাতা ও বেতন ইতোমধ্যেই ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে। পাশাপাশি, সরকার-সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে একই ধারা অনুসরণের আহ্বান জানানো হয়েছে এবং বেসরকারি কোম্পানিগুলোতেও মজুরি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

আনোয়ার জোর দিয়ে বলেন, ক্ষমতাসীনদের ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়, বরং অভাবীদের কল্যাণে সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। কেবল পরিকল্পনা ঘোষণা নয়, বাস্তবায়ন ও কর্মপরিকল্পনার মধ্যে সঙ্গতি থাকতে হবে।

সরকারের সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সমালোচনা অবশ্যই ভদ্রতা ও সম্মান বজায় রেখে করা উচিত—অপমান, অপবাদ বা উসকানি ছাড়া।