অনাগত সন্তানের মুখ না দেখেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন বাবা

আলমডাঙ্গায় ট্রাকের ধাক্কায় আলমসাধু চালক জগন্নাথপুরের তরিকুল নিহত
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: অনাগত সন্তানের মুখ না দেখেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন আলমডাঙ্গার জগন্নাথপুরের আলমসাধু চালক তরিকুল ইসলাম। আলমডাঙ্গা থেকে চুয়াডাঙ্গা যাওয়ার পথে ব-বিল নামক স্থানে দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে দ্রুতগামী কোনো ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে তরিকুলের মৃত্যু হয়েছে। আবার অনেকেই বলছেন, আলমসাধু উল্টে চালক তরিকুলের মৃত্যু হতে পারে। গতকাল সোমবার সকালে আলমডাঙ্গা-চুয়াডাঙ্গা সড়কের ব-বিল রেলগেট এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
পরিবারসূত্রে জানা যায়, কালিদাসপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের জাহের আলীর ছেলে তরিকুল ইসলাম (২২) আলমসাধু চালিয়ে ভোরে চুয়াডাঙ্গায় যাচ্ছিলেন পাইকারি বাজার থেকে মহাজনের ফল আনতে। পথিমধ্যে বন্ডবিল এলাকায় পৌঁছুলে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, মাথায় প্রচ- চোট পেয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। অনেকের ধারণা যে, দ্রুতগামী কোনো ট্রাকের ধাক্কায় তরিকুলের আলমসাধু সড়কের ওপর উল্টে যায়। তরিকুলও সড়কের ওপর আছড়ে পড়ে মাথা থেতলে মারা যায়। তবে তাদের এ দাবির পক্ষে কোন নির্দিষ্ট তথ্য বা প্রমাণ মেলেনি।
আলমডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রকিবুল ইসলাম বলেন, তরিকুল ইসলাম দ্রুতগতির আলমসাধু বন্ডবিল রেলগেট এলাকায় হঠাৎ উল্টে গেলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। তরিকুল ইসলামের বাবা জাহের আলীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রামসূত্রে জানা যায়, নিহত তরিকুল ইসলাম আনন্দধামের ফল ব্যবসায়ী মাসুদের ফল আনতে গতকাল ভোরে তিনি চুয়াডাঙ্গায় যাচ্ছিলেন।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গায় ফল আনতে যাওয়ার সময় বন্ডবিল নামকস্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় আলমসাধু চালকের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অজ্ঞাত কোন ট্রাকের ধাক্কায় এ ঘটনা ঘটেছে। কোন অভিযোগ না থাকায় সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে মরদেহটি পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
জগন্নাথপুরের জাহের আলীর ৩ ছেলের মধ্যে তরিকুল ইসলাম ছিলেন বড়। তার ৩ বছরের একটি শিশুকন্যা রয়েছে। তাছাড়া তার স্ত্রী ৮ মাসের অন্তঃসত্বা। অনাগত সন্তানের মুখ তিনি আর দেখে যেতে পারলেন না। সোমবার বাদ আছর জানাজা শেষে গ্রামের গোরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে। তার আকস্মিক মৃত্যুতে মা-বাপ, স্ত্রী-কন্যা ও ভাইদের বুকফাটা আহাজারিতে গ্রামের বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।

Comments (0)
Add Comment