আবারও অনলাইন ভিত্তিক কোম্পানি ইউনিপে-টুর আদলে দিচ্ছে অভাবনীয় লাভের টোপ

এজেন্টদের মাধ্যমে অ্যাপস’র একাউন্ট খুলিয়ে লগ্নিকারীদের লাখ লাখ টাকা নেয়ার খবরে চুয়াডাঙ্গায় আটক ৩ : মুচলেকায় মুক্তি
স্টাফ রিপোর্টার: ইউনেপে টু’র আদলে আবারও অনলাইন অ্যাপস ভিত্তিক অভাবনীয় লাভের কথায় কাড়ি কাড়ি টাকা হাতিয়ে নেয়ার খবর পাওয়া গেছে। যতো টাকা লগ্নি, ততোই চক্রবৃদ্ধি লাভের লোভে অসংখ্য মানুষ ইতোমধ্যেই হাজার হাজার টাকা লগ্নি করেছেন। আরও বেশি লগ্নিকারী আকৃষ্ট করতে প্রথম দিকের লগ্নিকারীদের লাভের টাকাও দেয়া হচ্ছে। যদিও লাখ লাখ টাকা লগ্নি করে অনেকেই ইতোমধ্যেই অনিশ্চয়তার প্রহর গুনছেন, তাদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলে বলছেন, ইউনিপে-টু যেভাবে দেশ থেকে কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে, এসএসপি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস লিমিটেডও কি তেমনই করবে? ইউনিপে-টু একইভাবে অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের লাভের টোপে কয়েক হাজার লগ্নিকারীকে পথে বসিয়ে লাপাত্তা হয়েছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসএসপি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস লিমিটেড নামে অনলাইনে প্রতিষ্ঠান খুলে এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এরা ১২শ টাকা দিয়ে আইডি খুললে তথা লগ্নি করলে প্রতিদিন ১০ টাকা হারে লাভ দেয়ার কথা বলছে। আইডির সংখ্যা ১৩টি হলে লগ্নির অর্থের পরিমাণ কমিয়ে ৮শ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এভাবে যতো বিনিয়োগ ততো লাভের প্রলোভন দেখিয়ে সরলসোজা সাধারণ মানুষের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এদের অনেকেই লাভের টাকা পেয়ে ওই এজেন্টদের সাথে যুক্ত হয়ে আরও বেশি লাভের সুযোগ নিয়ে চক্রবৃদ্ধিহারে লগ্নিকারীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। ফলে চুয়াডাঙ্গার এজেন্টদের মাধ্যমে ওই অনলাইন অ্যাপস ভিত্তিক কোম্পানির একাউন্টে চলে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের অভিজাত রেস্টুরেন্টে বসেও যেমন নেয়া হচ্ছে টাকা, তেমনই চুয়াডাঙ্গা শেখপাড়ার একটি বাড়ি ভাড়ায় নিয়েও এজেন্টরা অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এরকমই তথ্য পেয়ে গত শুক্রবার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ অভিযানও চালিয়েছে। আলমডাঙ্গা টাকপাড়ার রেজাউল হকের ছেলে আলামিন, পাঁচকমলাপুরের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে জীবন ও মেহেরপুর রঘুনাথপুরের লাল্টুর ছেলে ইসলাম মিয়াকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। এ সময় কিছু কাগজপত্র দেখায়। টিন নম্বর দেখালেও ওই টিন নম্বর নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সরকারি অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। অবশ্য শেষ পর্যন্ত আটককৃতদের বিরুদ্ধে তেমন কেউ বাদী হয়ে মামলা না করার কারণে মুচলেকা নিয়ে ৩ জনকেই একজনের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই শামীম জানান, তিনজনই আর অনৈতিক কোনো কাজ করবে না বা অনৈতিক কোনো কাজের সাথে জড়িত থাকবে না মর্মে অঙ্গীকারও করেছে। আবারও যদি অভিন্ন কাজের সাথে জড়িত হয় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সদর থানার অফিসার ইনচার্জ বলেছেন, বিষয়টির দিকে দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। যে প্রতিষ্ঠানের নামে মোটা অঙ্কের লাভ দেখিয়ে টাকা নেয়া হচ্ছে সেটি সম্পর্কেও খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
এদিকে ইউনিপে-টুতে বিনিয়োগ করে কয়েক লাখ টাকা হারানো বেশ ক’জন বলেছেন, প্রথম দিকে বুঝতেই পারিনি অনলাইন ভিত্তিক কোম্পানি প্রতারণা করবে। প্রথম দিকে যারা অর্থ লগ্নি করেছে তারা কিছুদিন লাভের টাকা পেলেও পরে তাদের মূলধনও হারিয়েছে। নতুন করে অনলাইন ভিত্তিক কোম্পানি একইভাবে লাভের লোভ দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টির দিকে প্রশাসনের আশুদৃষ্টি দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

Comments (0)
Add Comment