হাটবোয়ালিয়া/ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার ভাংবাড়িয়ায় লাইসেন্স ছাড়াই সার মজুত ও পাচারের অভিযোগে এক সার ব্যবসায়ীর গোডাউনে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এতে বিপুল পরিমাণ সার মজুতের প্রমাণ মিলেছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের সার ব্যবসায়ী মিনারুল ইসলাম রাতের আঁধারে চোরাই পথে সার সংগ্রহ করে নিজের গোডাউনে মজুত করতেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি বস্তা ডিএপি সারের দাম এক হাজার ৫০ টাকা হলেও তিনি তা দেড় হাজার টাকায় মেহেরপুরের গাংনী ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় পাচার করতেন। গত মঙ্গলবার রাতে গাংনী – হাটবোয়ালিয়া সড়কের একটি স-মিলের সামনে সন্দেহজনকভাবে চলাচলকারী একটি লাটাহাম্বার গাড়ি স্থানীয় লোকজন থামিয়ে দেন। গাড়িটিতে থাকা ৫০ বস্তা ডিএপি সার উদ্ধার করা হয়। পরে জানা যায়, এসব সার মিনারুল ইসলামের গোডাউন থেকে পাচারের জন্য নেয়া হচ্ছিলো।পরদিন বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিষ কুমার বসু ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ ওই গোডাউনে অভিযান চালান। কর্মকর্তারা জানান, সেখানে বিএডিসি বা বিসিআইসির কোনো বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই প্রায় এক হাজার বস্তা ডিএপি, টিএসপি, ইউরিয়া ও অন্যান্য সার মজুত পাওয়া যায়। অভিযানের সময় স্থানীয় সার সিন্ডিকেটের কয়েকজন লোক ঘটনাস্থলে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। তারা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে পরিস্থিতি থমথমে হয়ে ওঠে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিনারুল ইসলামকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং উদ্ধার হওয়া ৫০ বস্তা ডিএপি সার জব্দ করেন। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বৈধ লাইসেন্স ছাড়া সার ব্যবসা এবং সার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ পলাশ বলেন, মিনারুল ইসলামের নামে কোনো লাইসেন্স নেই। তিনি অবৈধভাবে সার ব্যবসা করছেন। কৃষক সাজিয়ে তাঁর লোকজন আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণও করেছে। সিন্ডিকেটে যারা জড়িত থাকুক, প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় কৃষকরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, সার পাচার বন্ধ না হলে ন্যায্যমূল্যে সার পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। প্রশাসনের এ অভিযান তাদের কাছে আশার বার্তা হয়ে এসেছে।