কুমড়ো-কলাই বড়ি দেয়ার তোড়জোড়ের মাঝে কুয়াশা আর মেঘলা আকাশ কপালে ফেলেছে দুশ্চিন্তার ভাজ

আনোয়ার হোসেন: গ্রাম বাংলায় কুমড়ো কলাইয়ের বড়ি দেয়ার ধুম পড়েছে। যদিও গতকাল থেকে কুয়াশা আর মেঘলা আকাশ বড়ি দেয়া গৃহিনীদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে দুদিনের মধ্যে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভবনা নেই। ৫ দিনের শেষভাগে রাতের তাপমাত্র আরও হ্রাস পেতে পারে।
গতকাল সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা যশোরে রেকর্ড করা হয়। সর্বনি¤œ ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিলো সীতাকু-ে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ছিলো ২৮ এবং সর্বনি¤œ ১৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কয়েকদিন আগে দিনে প্রখর রোদ আর রাতে তীব্র শীত অনুভূত হয়। এটাই প্রকৃত শীত। তবে গত পরশু রাত থেকে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন কুয়াশার প্রভাব বেড়েছে, তেমনই দিনের অধিকাংশ সময়ই থেকেছে মেঘলা। মেঘ যদিও দেশের শুধুমাত্র তেতুলিয়ায় মাত্র ৫ মিলিমিটার ছাড়া অন্য কোথাও বৃষ্টি ঝরায়নি। বৃষ্টি হোক আর না হোক, আকাশ মেঘলা হলেই কুমড়ো-কলাই বড়ির সর্বনাশ। গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মরসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসারে অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। উপ মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিত অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। ফলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহওয়ার শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারী কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আজ সূর্যাস্ত যাবে সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে। ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। ৫ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময়ের শেষার্ধে রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় শীতের শুরুতেই চালকুমড়ো আর মাশ কলাইয়ের বাড়ি দেয়ার ধুম পড়েছে। ব্যবসায়ীকভাবেও বড়ি দিয়ে বাজারে বিক্রির হয়ে আসছে কয়েক বছর ধরে। আগে শীতের বিকেলে চালকুমড়ো কুরে ডাল ভিজিয়ে রাতের শীতল স্থানে রাখা হতো। এরপর রাতেই প্রথমভাগে কিম্বা ভোর রাতে ঢেকিতে কিম্বা চাকি-যাতায় তা পিষে শীতের ভোরে উৎসবের আমেজে মইয়ে বাঁধা চালির ওপর দেয়া হতো বাড়ি। এখন? অধিকাংশ বাড়িতেই মইয়ের বদলে কাঠ বা বাঁশের ফ্রেমের ওপর চালি বেঁধে বাড়ি দেয়ার চল শুরু হয়েছে। ঢেঁকির বদলে গম ভাঙিয়ে আটা-ময়দা করা মেশিনেই পিশে নেয়া হয় অল্প সময়ে। এতে বাংলার নারীদের খাটুনি কমেছে ঠিক, তাতে বড়ির সেই স্বাদ আছে কি-না তা নিয়ে ভোজন রশিকদের মধ্যেও রয়েছে বিতর্ক। এবার চুয়াডাঙ্গার বাজারে ভালো একটি চাল কুমড়ো কিনতে হলে গুনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ১শ’ টাকা পর্যন্ত। গ্রামে বা গ্রামপর্যায়ের হাটে অবশ্য দাম একটু কম। অর মাসকলাই? ১শ ২০ টাকার কমে ১ কেজি মেলা ভার।

 

Comments (0)
Add Comment