কুষ্টিয়া-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়কে শুয়ে অবরোধ করেছেন সাবেক তিনবারের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ অধ্যাপক শহীদুল ইসলামের সমর্থকরা। বুধবার বিকেলে মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের মশান বাজারে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহাসড়কে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বেলা সাড়ে চারটার দিকে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহাসড়কের মশান বাজার এলাকায় নেতা-কর্মীরা আসতে থাকেন। রাস্তার দুই ধারে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন এবং উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। উক্ত মহাসড়ক অবরোধ করে তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে মিছিল, স্লোগান ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে তাঁরা সড়কের মাঝখানে শুয়ে পড়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান। সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ শেষে নেতাকর্মীরা ঘোষণা দেন, প্রার্থী পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এসময় রাস্তার দুই পাশে যানজট দেখা দেয়। এ কর্মসূচিতে সাবেক এমপি অধ্যাপক শহীদুল ইসলামের হাজারো নেতাকর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। তারা এই আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া ব্যারিষ্টার রাগিব রউফ চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তৃণমূলের মর্যাদা যখন বারবার উপেক্ষিত হয়, তখন এভাবে রাস্তায় শুয়ে পড়া ছাড়া আর কোনও পথ নেই। তিনি দীর্ঘদিন তৃণমুলের নেতা—কর্মী ও সাধারণ ভোটার থেকে দূরে ছিলেন। এই কারণে তৃণমূলের মধ্যে তার প্রতি ‘আস্থাহীনতা’ তৈরি হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘আমরা যে নেতাকে চিনি, তাকে এই আসন থেকে প্রার্থী করতে হবে। সাবেক এমপি অধ্যাপক শহীদুল ইসলামকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে তৃণমূল কখনোই সেটা মেনে নেবে না। আমরা দল ভাঙতে চাই না, কিন্তু তৃণমূলের ঘাম, রক্ত, ত্যাগকে যদি মূল্যায়ন না করা হয়, তাহলে কর্মীরা হতাশ হবেন, ক্ষুব্ধ হবেন।’
বিক্ষোভকারীদের দাবি, তৃণমূলের মর্যাদা যখন উপেক্ষিত হয়, তখন এইভাবে রাস্তায় শুয়ে পড়া ছাড়া আর কোনো পথ থাকে না।
উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আশরাফুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘আমরা যে নেতাকে চিনি, দলের পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন, সেই ত্যাগী নেতা অধ্যাপক শহীদুল ইসলামকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন দিলে তৃণমূল কখনোই সেটা মেনে নেবে না। চুড়ান্ত মনোনয়ন অধ্যাপক শহীদুল ইসলামকেই দিতে হবে। তা না হলে এই আসনটি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বিক্ষোভ শেষে নেতা-কর্মীরা ঘোষণা দেন, অতি দ্রুত বর্তমান প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে অধ্যাপক শহীদুল ইসলামকে প্রার্থী তালিকায় অন্তর্ভূক্তির দাবিতে তাঁদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে অব্যাহত থাকবে।
এসময় উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক খন্দকার টিপু সুলতান, পৌর বিএনপি’র সভাপতি আব্দুর রশিদ, উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক বাবু, বারুইপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম মুকুল, ধুবইল ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি বিল্লাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, আমলা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন, ছাতিয়ান ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কানু, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক সুলতান আলী, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি এমাদুল হক এমদাদ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মালেক, মনোয়ার হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জাহিদ হাসান, পৌর যুবদলের আহবায়ক সংগ্রাম খান জিল্লু, যুগ্ম আহবায়ক নাসিরুজ্জামান রানা, ইউনিয়ন যুবনেতা বিদ্যুৎ, আপন, উপজেলা ছাত্রনেতা ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।