গাংনী সাব রেজিস্ট্রারের শাস্তিসহ আট দফা দাবিতে মহুরাদের কলম বিরতি

গাংনী প্রতিনিধি: গাংনী উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার মাহফুজ রানার বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে অফিস চালানোসহ আট দফা দাবিতে প্রতিবাদ সভা ও কলম বিরতি শুরু করেছে দলিল লেখকরা (মহুরা)। গতকাল বুধবার সকালে সাব রেজিস্ট্রি অফিস চত্বরে প্রতিবাদ সভা শেষে দাবি উত্থাপন করে কলম বিরতির ঘোষণা দেয়া হয়।
এদিকে লিখিত দাবিনামা নিবন্ধন অধিদফতরের মহা পরিদর্শকসহ বিভিন্ন দফতরে প্রেরণ করেছেন দলিল লেখকরা। বুধবার সকালে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে মাইক নিয়ে প্রতিবাদসভা শুরু করেন দলিল লেখকরা। তারা দলিল লেখার কাজ বন্ধ করে প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ করেন। তবে সাব রেজিস্ট্রার মাহফুজ রানা ছুটিতে থাকায় তিনি অফিসে ছিলেন না।
প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন গাংনী উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন পিন্টু।
দলিল লেখক সমিতির সহ-সভাপতি হাজি রজবুল হকের কোরআন তেলওয়াতের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদসভা শুরু হয়। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি ফাকের আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বুলবুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, দিনাজ উদ্দীন, সাবেক কৃষক লীগ নেতা মজিবর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন হানিফ উল বাসার হানিফ। প্রতিবাদ সভা শেষে কলম বিরতি এবং লিখিত দাবিনামা প্রেরণ করা হয়।
দলিল লেখকদের দাবি, সাব রেজিস্ট্রার মাহফুজ রানা সরকারি সময়সূচী পরিপন্থি নিজের ইচ্ছায় অফিস করেন। ছুটিতে থাকলেও জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে কোনো নোটিশ দেন না। অন্যায়ভাবে নানা কারণ দেখিয়ে দলিল লেখক বাদে সরাসরি জনগণের নিকট থেকে ব্যক্তিগত পিএস দ্বারা ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রি করে। এনআইডি কার্ড তৈরীর আগে ভূমি জরিপ হয়েছে। ফলে এনআইডির সাথে জরিপের নামের বানান সমস্যা রয়েছে। এরকম বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি দিলেও তিনি জমি রেজিস্ট্রি করেন না। তবে তার পিএসএর সাথে টাকার চুক্তি হলে তিনি রেজিস্ট্রি করে দেন।
পৈত্রিক সম্পত্তির এ বিষয়ে রেজিস্ট্রি করা হবে না বলে তিনি নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছেন। যা নিবন্ধন পরিদফতরের পরিপন্থি। এছাড়াও দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার পরে টিসি মহুরা আব্দুল কালাম আজাদ নানাভাবে হয়রানি করে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে রশিদ প্রদান করেন। অফিসের বালাম বহি ও নকল নবীস পর্যাপ্ত থাকা স্বত্বেও শুধুমাত্র ভোগান্তি দেয়ার জন্য বালাম লেখার জন্য নকল নবীশদের নকল করার কাজ করানো হচ্ছে না। বর্তমানে ৭ হাজার দলিল এভাবে পেন্ডিং রয়েছে। ফলে দলিলের নকল তুলতে না পেরে অনেকে বিপাকে রয়েছেন।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন পিন্টু অভিযোগ করে বলেন, এর আগে তারা উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ খালেককে নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সমন্বয়ে একটি সমঝোতা হয়। সাব রেজিস্ট্রার সেখানে জানিয়েছিলেন এ ধরনের কর্মকা- থেকে তিনি বিরত থাকবেন। কিন্তু এ সুযোগ নিয়ে তিনি আমাদের ওপর প্রতিশোধ পরায়ণ হয়েছেন। দলিল লেখকসহ ও সাধারণ মানুষের হয়রানি বন্ধ করতে তার বিচার হতে হবে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত কলম বিরতি চলবে বলেও জানান তিনি।

Comments (0)
Add Comment