চা দোকানি গোলাম হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন

মেহেরপুর মুজিবনগরের চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরে চাঞ্চল্যকর চা দোকানি গোলাম লিয়াকত হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন ও তিনজনের এক বছর করে সশ্রম কারাদ- দিয়েছেন আদালত। মামলার অন্য তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের মৃত আলিয়াত খাঁর দুই ছেলে কাবিদুল খাঁ ও মফিদুল ইসলাম খাঁ এবং মৃত আবু লায়েছ খাঁর ছেলে জামাত আলী খাঁ (পলাতক)। এ ঘটনায় একই গ্রামের মৃত আবু লায়েছ খাঁর ছেলে ছোট খোকন, মৃত আবুল খাঁর দুই ছেলে ভরস খাঁ ও লিয়াকত খাঁকে এক বছরের সশ্রম কারাদ- প্রদান করেছে আদালত। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর তিন আসামি ওবিদ আলী, মশিউর রহমান ও তাছিরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন বিজ্ঞ বিচারক। গতকাল রোববার দুপুরের দিকে অতিরিক্তি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ দ-াদেশ প্রদান করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের হাটে ওই গ্রামের রিপন একই গ্রামের জামাত আলী ও খোকার কাছে পাওনা সাড়ে ৪শ’ টাকা চাইতে যান। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ের তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে রিপন হাটের মধ্যে তার বড় ভাই লিয়াকত আলীর চায়ের দোকানের একটি বেঞ্চে বসে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর ১০/১২ জন সংঘবদ্ধ হয়ে অস্ত্র নিয়ে রিপনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় চা দোকানি লিয়াকত আলী তার ভাই রিপনকে বাঁচাতে এলে অস্ত্রধারীরা ধারালো রামদা দিয়ে তার মাথার ওপর কোপ বসিয়ে দেয়। এ সময় রিপন দৌঁড়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ সময় লিয়াকত আলীর ছেলে ফয়সাল ও ভাই মাবুদ তাকে বাঁচাতে এলে তাদেরকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে তারা। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার করে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিয়াকত আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পরদিন নিহত লিয়াকত আলীর ভাই মোখলেছুর রহমান বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় ৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুজিবনগর থানার এস.আই মতিউর রহমান ২৫ ফেব্রুয়ারি ৯ জনকে দোষী সাব্যবস্ত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন। মামলার নথি পর্যালোচনা ও ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক গতকাল রোববার এ রায় প্রদান করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. কাজী শহিদুল হক ও আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. মিয়াজান আলী। আসামিরা উচ্চালতে আপিল করবেন বলে জানান তাদের স্বজনরা।

Comments (0)
Add Comment