স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তন্ময় আহমেদ তপু নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে অভিযান চালিয়ে মামলার এজহার নামীয় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, এক এসএসসি পরীক্ষার্থী তন্ময় আহমেদ তপু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রোববার রাত ১২টার দিকে নিহতের বড় ভাই মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় আসামী করা হয়েছে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে। এরই মধ্যে ওই মামলায় এজহার নামীয় এক আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু তথ্য দিয়েছে সে। বাকী আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। মামলাটি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এজহারে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের নামে বেশকিছু মামলা রয়েছে। তাদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। তারা কোন দলের নেতার হয়ে কাজ করে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মামলার তদন্ত ও আসামীদের গ্রেফতারের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে না। তবে, শিঘ্রই সুসংবাদ পাওয়া যাবে।
নিহত তপুর বন্ধুরা জানান, মূলত একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী এক মেয়ের সাথে তপুর প্রেমের সম্পর্ক। ওই মেয়েকে হকপাড়ার সিহাব নামে এক যুবক পছন্দ করতো। ঘটনার দিন সকালে স্কুলের সামনে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলছিল তপু। সিহাবও মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে সেখানে গিয়েছিল। এক পর্যায়ে তপুর সঙ্গে সিহাবের বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর ফোন করে কয়েকজনকে ডাকে সিহাব। কিছুক্ষণের মধ্যে কালো রঙের বাইকে করে সেখানে হাজির হয় ফার্মপাড়ার ইমন হোসেন, শান্তিপাড়ার এমদাদুল হক আকাশ ও মুসলিমপাড়ার রূপক হোসেন। সিহাবের নেতৃত্বে তারা তপুকে ধারাল রামদা ও চাপাতি দিয়ে কোপাতে শুরু করে। প্রথমে তারা তপুর মাথায় কোপ দেয়। আঘাত ঠেকাতে গিয়ে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তপুর। হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, এসএসসি পরীক্ষার্থী তপু হত্যার ঘটনায় অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশকিছু তথ্য। চুয়াডাঙ্গা শহরের ফার্মপাড়ার ইমন, শিহাব, শান্তিপাড়ার আকাশ ও মুসলিমপাড়ার রূপক কিশোর গ্যাং এর সদস্য। একটি রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের ছত্র ছায়ায় বিভিন্ন অপকর্ম করে তারা। এরআগেও হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে তাদের নাম উঠে আসে। বক্তৃতা মঞ্চেও নেতাদের আশপাশে দেখা যায় তাদের। নিহত তপুর বড় ভাই মাসুদুর রহমান জানান, তপু কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলনা। বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে গিয়েছিল সে। সেখানে ওরা আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে। কি কারণে মেরেছে আমরা কিছুই জানিনা। তপুর কোন শত্রুও ছিলনা। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।
উল্লেখ্য, রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশানপাড়ায় আল হেলাল ইসলামীয়া একাডেমীতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের মধ্যে প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তন্ময় আহমেদ তপু নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।