স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার ব্যবসায়ী কামাল হোসেন ও জীবননগরের দিনমজুর কৃষক বাবলু রহমানকে হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আকবর আলী শেখ চাঞ্চল্যকর দুটি মামলায় আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্তদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। দ-প্রাপ্তরা হলেন-আলমডাঙ্গার জেহালার ঠিকাদার কামাল হোসেনকে হত্যার দায়ে বামানগরের কাশেম আলীর ছেলে স্বাধীন আলী ও চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ার মৃত বিপ্লব হোসেনের ছেলে আশিকুর রহমান আশিককে মৃত্যুদ- ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং পাঁচজনকে খালাস প্রদান করা হয়। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন-আলমডাঙ্গার জেহালা ঝাড়পাড়ার মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক, জেহালা ক্লিনিকপাড়ার হাজি তোফাজেল হোসেন মিয়ার ছেলে তরিকুল ইসলাম, মৃত মোতাহার হোসেনর স্ত্রী ইসমত আরা বিউটি, মৃত মোতাহার হোসেনের মেয়ে সায়মা নিগার এবং জেহালার বাজারপাড়ার কার্তিক দাসের ছেলে রাহুল কুমার দাস। অপর মামলায় দিনমজুর কৃষক বাবলু রহমানকে হত্যার দায়ে জীবননগরের গঙ্গাদাশপুরের ইব্রাহীম ম-লের ছেলে জমির উদ্দিনকে মৃত্যুদ- ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। চুয়াডাঙ্গা আদালত পুলিশের পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মৃধা এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের আদেশের পর মৃত্যুদ- পাওয়া তিনজনকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৯ মে রাত ১০টার দিকে ব্যবসায়ী কামাল হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহত কামাল হোসেনের স্ত্রী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় স্বাধীন আলী ও আশিকুর রহমানসহ ১১জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। জমিজমা নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
মামলার রায়ে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ী কামাল হোসেন হত্যা মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্বাধীন আলী ও আশিকুর রহমানকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদ-ে দ-িত করা হয়েছে। এ মামলায় অন্য আসামি রফিকুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, ইসমত আরা (বিউটি), সায়মা নিগার ও রাহুল কুমার দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়েছে।
এদিকে জীবননগর উপজেলার গঙ্গাদাসপুরে ২০২২ সালের ১৬ জুন সকাল সোয়া ১০টার দিকে প্রকাশ্যে কৃষক বাবলু রহমানকে পূর্বশত্রুতার জেরে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী চায়না খাতুন বাদী হয়ে একই গ্রামের জমির উদ্দিনের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পারিবারিক বিরোধের জেরে আসামি জমির উদ্দিন তার হাতে থাকা কোদাল দিয়ে বাবলু রহমানের মাথায় কোপ দেন। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবলুকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কৃষক বাবলু রহমান হত্যা মামলার রায়ে বলা হয়েছে, অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত জমির উদ্দিনকে মৃত্যুদ-ের রায় দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্থদ- দেয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. মারুফ সরোয়ার বাবু বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে দুটি মামলা প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় তিনজনকে মৃত্যুদ- প্রদান করা হয়েছে এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত।