চুয়াডাঙ্গায় বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জের : আওয়ামীলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জেরে জাহাঙ্গীর মল্লিক (৩৫) নামে এক আওয়ামীলীগ নেতকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।  বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে।  বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাহাঙ্গীর। সে একই উপজেলার নুরুল্লাহপুর গ্রামের রনজিত মল্লিকের ছেলে ও তিতুদহ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।  তিনি পেশায় একজন বালি ব্যবসায়ী ছিলেন। তার মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, দুপুরে ছয়ঘরিয়া গ্রামে ট্রাক্টরযোগে বালু নিতে যান জাহাঙ্গীরসহ আরও কয়েকজন। বিষয়টি জানতে পেরে তাদের ধাওয়া করে প্রতিপক্ষরা।  জাহাঙ্গীরের সাথে থাকা সবাই পালিয়ে গেলে ধরা পড়ে সে।  পরে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে ফেলে রেখে যায় তারা।  আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে স্থানীয়রা।  সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জাহাঙ্গীর।

সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, নিহত জাহাঙ্গীরের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।  তার বাম হাত ভাঙা ছিল।  বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছয়ঘরিয়া এলাকার অনেকেই জানান, সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শুকুর আলীর সাথে ছয়ঘরিয়া গ্রামের যুবলীগ নেতা যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিনের দলীয় বিরোধ রয়েছে। সম্প্রতি ছয়ঘরিয়া গ্রামের তিস্তা নদীতে থেকে বালু উত্তোলন করে কেরু অ্যাড কোম্পানি লিমিটেডের খামারের পাশেই একটি স্থানে রাখেন আওয়ামীলীগ নেতা শুকুর আলী। পূর্ব বিরোধের জেরে সেই বালু দখল নিয়ে বেচাবিক্রি বন্ধ করে দেন যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিন।

নিহত জাহাঙ্গীরের বাবা রনজিত মল্লিক জানান, সকালে একই গ্রামের  বালু ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম তাকে ডেকে নিয়ে যায়।  পরে আর বাড়ি ফেরেনি সে।

নিহত জাহাঙ্গীরের ভাই ইকবাল হোসেন জানান, বালু উত্তোলন ও চাঁদা দাবী নিয়ে ছয়ঘরিয়া গ্রামের প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপের সাথে জাহাঙ্গীরদের বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জের ধরেই জাহাঙ্গীরকে কোদাল, ব্যালচা ও লাঠিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়।  পরে সে মারা যায়।

তিতুদহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শুকুর আলী জানান, জাহাঙ্গীর আমার বালুর ব্যবসা দেখাশোনা করতো। দুপুরে সে বালি উত্তোলনের জায়গায় গেলে তার উপর হামলা চালায় যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিনসহ কয়েকজন। এরআগে উত্তোলনকৃত বালু বিক্রি করতে গেলে চাঁদা দাবি করলে আমি একটি মামলাও করি।

ঘটনার বিষয়ে ছয়ঘরিয়া গ্রামের যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান,  বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় দুই গ্রুপের বিরোধ চলে আসছিল।  তারই জের ধরে আজ বালু নিতে এলে জাহাঙ্গীরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।

তিনি আরও জানান, নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর জড়িতদের আটক করতে ওই এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।  থানায় এখনও কোন অভিযোগ বা মামলা করেনি নিহতের পরিবার।

Comments (0)
Add Comment