ছাত্রী ধর্ষণ : প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক আল-মামুন সাময়িক বরখাস্ত

জীবননগর ব্যুরো: ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে জীবননগর উপজেলার কুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আল-মামুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (চলতি দায়িত্ব) মোস্তাফিজুর রহমান গত বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেন বলে জানা গেছে। গত ২৪ এপ্রিল এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ৯ আগস্ট ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে আল-মামুনকে অভিযুক্ত করে জীবননগর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।  গত ১৬ আগস্ট শিক্ষক আল-মামুন আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে জীবননগর আমলী আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজেদুর রহমান তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ প্রদান করেন।

অভিযোগে প্রকাশ, জীবননগর উপজেলার কুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আল-মামুন (৪৫) মোক্তারপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিয়ে প্রাইভেট বাণিজ্য চালিয়ে আসছিলেন। করোনা সংক্রমণে দেশব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ ঘোষণা করলে তার প্রাইভেট বাণিজ্যে ধস নামে। সে সময় শিক্ষক আল-মামুন অত্যন্ত গোপনে তার গ্রামের মেয়ে মিনাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ও তারই ছোট বোন ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে বাড়িতে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন। এরই মাঝে গত ২৪ এপ্রিল শিক্ষকের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা বেড়াতে গেলে সুযোগ বুঝে ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে কৌশলে নিজের রান্নাঘরে পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী বাড়িতে ফিরে তার মায়ের কাছে ঘটনাটি প্রকাশ করে। বিষয়টি প্রতিবেশীদের মধ্যে জানাজানি হলে অভিযুক্ত ধর্ষক শিক্ষক প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় ছাত্রীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা  দেয়ার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তিনি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতাদের শরনাপন্ন হন। নেতারা বিচার করে দেয়ার নামে কালক্ষেপণ শুরু করে। এক পর্যায়ে ধর্ষিতার পরিবার বিচার না পেয়ে গত ৯ আগস্ট জীবননগর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। জীবননগর থানা ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষার করে। এ মামলা দায়েরের পর প্রভাবশালী শিক্ষক আল-মামুন গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দেন। গত ১৬ আগস্ট তিনি চুয়াডাঙ্গার জীবননগর আমলী আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।

পরবর্তীতে তিনি জামিন নিয়ে বাড়ি ফেরেন। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা অধিদফতর হতে তাকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করে বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করা হয়েছে।

Comments (0)
Add Comment