জামিন নিয়ে বাড়ি ফিরলেন হাসপাতাল থেকে পালানো সেই ৭ জন

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া ১০ করোনা রোগীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এর মধ্যে সাতজনকে সোমবার গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। দুপুরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহাদী হাসান শুনানি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। দুই দফার পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসায় এদিন সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। এর আগে ৮ মে ওই ১০ জনের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে।
জামিন প্রাপ্তরা হলেন- সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপপাড়া গ্রামের জালাল হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন (৩২), যশোর সদর উপজেলার পশ্চিম বারান্দিপাড়া এলাকার বিশ্বনাথ দত্তের স্ত্রী মনিমালা দত্ত (৪৯), রাজবাড়ী সদরের রামকান্তপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নাসিমা আক্তার (৫০), খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ডামরাইল গ্রামের আহম্মদ সানার ছেলে আমিরুল সানা (৫২), খুলনা শহরের নতুন বাজার খ্রিস্টান গলির শের আলীর ছেলে সোহেল সরদার (১৭), খুলনা শহরের বিকে মেইন রোড এলাকার পুলিন কৃষ্ণ সরকারের ছেলে বিবেকানন্দ সরকার (৫২) ও যশোর সদরের পাঁচবাড়িয়া এলাকার রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা (১৯)। এর মধ্যে ফাতেমা ছাড়া সবাই ভারতফেরত। এছাড়াও গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে- সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা দক্ষিণ শ্রীপুরের মনোতাষ সরদারের স্ত্রী শেফালি রাণী সরদার (৪০), যশোর সদরের পাঁচবাড়িয়া এলাকার একরামুল কবীরের স্ত্রী রুমা (৩০) ও শহরের ওয়াপদা গ্যারেজ এলাকার মৃত ভদ্র বিশ্বাসের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাসের (৩৭) নামে। এদের মধ্যে রুমা ও প্রদীপ স্থানীয় রোগী।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিল ভারত থেকে ফিরে আসা সাত করোনা রোগী ও স্থানীয় তিন করোনা রোগী যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের রেডজোন থেকে পালিয়ে যায়। রেড জোন থেকে ১০ করোনা রোগী পালিয়ে যাওয়ার খবর জানাজানি হলে এ নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ২৬ এপ্রিল পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এদের বাড়ি থেকে ‘ধরে এনে’ ফের যশোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশ এই দশজনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে নন এফআইআর প্রসিকিউশন নং-৬১, তারিখ ০৮.০৫.২১ সংক্রমণ রোগ (প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৫(২) ধারায় মামলা দাখিল করে। মামলার প্রেক্ষিতে আদালত ওই ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় সোমবার ৭ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। দুই বারের পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দেয়ার পর তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকী তিনজনকেও হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এদিকে, আদালত সূত্র জানিয়েছে, আদালতে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের দাখিলকৃত নন এফআইআর প্রসিকিউশন নং-৬১, তারিখ ০৮.০৫.২১ সংক্রমন রোগ (প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৫(২) ধারা অনুযায়ী, সংক্রমণ বিধি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করায় আদালত তাদেরকে অনূর্ধ্ব তিন মাসের কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন। তবে বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বিচারক এই দণ্ড প্রদান করতে পারেন।

Comments (0)
Add Comment