জুলাই আন্দোলন : কারো চোখে ভালো আছে দেশ কারো চোখে নেই ইতিবাচক কোনো পরিবর্তন আসেনি রাজনীতিতে : জানমালের নিরাপত্তা কমেছে

জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছরের মাথায় দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির যে হিসাব, তাতে আশা-নিরাশা দুই-ই আছে। যোগ-বিয়োগ করে ‘হতাশার’ হিসাব দেওয়া ব্যক্তিদের কেউ কেউ বলছেন, জুলাই আন্দোলনের এক বছরে দেশে গুণগত কোনো পরিবর্তনই আসেনি। ‘আগের চেয়েও খারাপ’ হয়েছে দেশের অর্থনীতি। জানমালের নিরাপত্তা কমেছে। ইতিবাচক কোনো পরিবর্তন আসেনি রাজনীতিতে। আর দেশের অবস্থা যারা আগের চেয়ে ভালো দেখছেন, তারা অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানো, মূল্যস্ফীতি কমে যাওয়া, মানুষের নিরাপত্তা কিংবা সরকারি সেবার মান বাড়ার মত যুক্তিকে সামনে আনছেন। এক বছরের মাথায় এসে হতাশা জন্মানোর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, মানুষের মধ্যে পরিবর্তনের যে প্রত্যাশা ছিলো, তার ‘দৃশ্যমান অগ্রগতি’ নেই। কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের দাবিতে রূপ নেয়া জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল মোবাইল ফোনে আর্থিক লেনদেনের ব্যবসা করা কাউসার আহমেদের। অভ্যুত্থানের এক বছর পরে এসে কাউসার মনে করছেন, ওই আন্দোলন ছিল একটা গোষ্ঠীর ‘প্রতিশোধ’ তিনি বলেন, “এটা বিপ্লব হয় নাই, প্রতিশোধ হইছে। হয়ত তার (গত সরকার) কাছে কিছু চেয়েছিল, দেয়নি। প্রতিশোধ নিল অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে।” গত বছরের অগাস্টে সরকার পতনের মাসেই বড় ধরনের বন্যা হয় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। দুর্গতদের সহায়তার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্যোগ নেয় আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাতে বিপুল মানুষের সাড়াও মেলে। কিন্তু ওই ঘটনা ঘিরেই সমন্বয়করা ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ হন বলে মত কাউসারের। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “তারা মানুষের কাছে ঠিকমত বিলায় নাই। জনগণ যেন শান্তিতে থাকে, তোমরা সেরকম কিছু করে দেখাও। পড়ালেখা শেষ না করেই রাজনীতিতে যোগ দিছে; তার মানে লোভে পড়ছে। ওরাও আগের সরকারেরই মতই, পরিবর্তন নাই। “ওরা কীভাবে ক্ষমতায় যাবে, কীভাবে ক্ষমতায় থাকবে, তা নিয়েই কথাবার্তা বলতেছে। এক বছর যে হয়ে গেল, তার মধ্যে জনগণ নিয়ে তো একটা কথাও বলে নাই। সব নাকি ওরাই করছে, তাহলে একজন গর্ভবতী নারী কেন নামল, আমি কেন নামলাম শিশু সন্তান নিয়ে?” ফুটপাতে ব্যবসা করা কাউসার বলছেন, “বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধকে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান দিয়ে আড়াল করার পাঁয়তারা চলছে। “ভাষা, আন্দোলন, বিজয় দিবস, আমার সোনার বাংলা— এগুলো মুছতে চায়। মুক্তিযুদ্ধকে তারা ভুলতে চায়, কেন? যুদ্ধটাকে তো অস্বীকার করা যাবে না।” জুলাই আন্দোলনে নারীদের জোরালো অংশগ্রহণ থাকলেও বর্তমানে তাদের ‘কোণঠাসা করার পরিস্থিতি’ চলছে বলে মনে করছেন তিনি। “বাসে নিজে দেখছি, হেলপার নামার সুযোগ দেয় না; খারাপ আচরণ কর; শরীর দিয়ে ধাক্কা মার; রাস্তাঘাটে বিরক্ত করে। কই, কোনো পদক্ষেপ নাইতো! থাকলে বুঝতাম, তারা এগুলা চায় না।” হাই কোর্টের একটি মামলা ঘিরে গত বছরের জুন মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। জুলাইয়ে তা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে সারা দেশে। মাঝ জুলাইয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য আন্দোলনকে আরও ‘উসকে’ দেয়। পরে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান। ওই আন্দোলনে সাধারণ মানুষেরও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। তাদের একটি অংশ এখনও অভ্যুত্থানের পথ ধরে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে আস্থা রাখেন। তবে আরেকটি অংশ আশাহত। বিশ্লেষকরা বলছেন, অভ্যুত্থানে যে জনআকাঙ্ক্ষা ছিল, তা পূরণ না হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঠছে। তারা মনে করছেন, গত এক বছরে সরকার নিরাপত্তা থেকে শুরু অর্থনৈতিক অবস্থার আশারুরূপ উন্নতি করতে পারেনি। এ নিয়ে সরকারের স্পষ্ট উদ্যোগও নেই। মাঠের আন্দোলনে ছিলেন সাভারের বাসিন্দা নীলিমা ইয়াসমিন, যিনি ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। কাজ শেষে বাড়ি ফিরতে তার রাত হয়ে যায়। তিনি বলেন, “আগে আরও রাতেও স্বচ্ছন্দ্যে বাইরে কাজ করতে পারতাম, ভয় হইত না অত। এখন দিনেও ভয় কাজ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গাতেও নারীদের হয়রানি করা হচ্ছে, আর যারা করছে তাদের ফুলের মালা দেওয়া হচ্ছে- এতেই বোঝা যায় নারীদের কোনো নিরাপত্তা নাই।” মহাখালীর ফল বিক্রেতা সাইদুল মিয়া বলেন, আন্দোলনটা ‘যৌক্তিক’ ছিল; তবে পরের সময়গুলো ‘ভালো যাচ্ছে না’। অর্থনৈতিক অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে বলেই তার মনে হচ্ছে। “বিগত সরকারের সময়ে পোলাপান বেপরোয়া হয়ে গেছিল। তখন মনে করছিলাম, দেশের ভালোর জন্যই (আন্দোলন) করছে; এখন তো দিন দিন অবনতি হচ্ছে। আমরা কোনো ভালো পর্যায়ে নাই। দেখা গেছে, মাল আনলে মাল ঠিক মত বেচতে পারি না। দিন দিনে অবনতি হইতেছে।” পরিস্থিতি বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, “একজন আগে দুয়েকদিন পরপর পাঁচ কেজি করে আম কিনত। এখন সে ১৫ দিনেও এক-দুই কেজি আম নেয় না। “দলীয় সরকার ক্ষমতায় এলে মনে হয় একটা লাইনে আসবে। দেশের মধ্যে শৃঙ্খলা থাকে, এখন তো কেউ কাউকে গোনে না। যে যেমনে পারতেছে চলতেছে, কাউকে কেউ মানে না। এখন সাধারণ মানুষের জন্য কোনো স্বাধীনতা নাই, কোনো অভিভাবক নাই।” শুরু থেকেই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রিদোয়ান আহমেদ। তার উপলব্ধি হল, আন্দোলনের সময় নতুন বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা ছিল, যেখানে জনগণ গণতন্ত্র, প্রশাসনের স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও মর্যাদা পাবে। এসব আগে নির্দিষ্ট গোষ্ঠী পেয়েছে, সাধারণ মানুষ পায়নি। তবে সে আকাঙ্ক্ষা পূরণের কোনো লক্ষণ এখনো তিনি দেখছেন না। “আমরা নিরাপত্তা পাচ্ছি না; সামাজিক মর্যাদার দিক দিয়েও পিছিয়ে আছ; প্রশাসন এখনও অস্বচ্ছ। আন্দোলনের ফলাফলটা এখন ম্যানিপুলেট করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক দল এর সুবিধাটা নিচ্ছে। কোনো কোনো দল তো বলছে, এটা তাদের আন্দোলন, যদিও এটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল না। এসব কারণে ভবিষ্যতে কী হবে, এটা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি এখন।” অভ্যুত্থানের পর ইতিবাচক কোনো পরিবর্তন দেখছেন না মুদি দোকানি মোজাম্মেল শেখ। তিনি বলেন, “জনগণের কোনো কাজেই আসেনি; জনগণের কোনো উন্নয়ন না। সংস্কার করবে কইল, সংস্কার নাই। নির্বাচন নাই, মেম্বার, চেয়ারম্যান নাই- কী পাইলাম এক বছরে?” আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিনই ভাঙচুর আর লুটপাটে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা জাদুঘর, ভাঙা হয় বীরশ্রেষ্ঠদের ম্যুরাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়, ভাঙা হয় ময়মনসিংহে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আবক্ষ ভাস্কর্য। এসব কারণে জুলাই আন্দোলনকে ‘মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির প্রতিশোধ’ হিসেবে দেখছেন সুনামগঞ্জের নেহেরু রঞ্জন সরকার। “এখন তো মনে হচ্ছে আইওয়াশ ছিল এটা। আন্দোলনের সময় ভালো ভালো কথা বললেও আখেরে মানুষ কিছু পায়নি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকলে এসব ভাস্কর্য ভাঙত না। আর কোটার জন্য আন্দোলন করল, এখন তো নিজেরাই কোটা নিচ্ছে।” বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ কেউ মনে করছেন, অভ্যুত্থানে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, তা এখনও পূরণ হয়নি। সংগঠনের মুখপাত্র সিনথিয়া জাহীন আয়েশা বলেন, “জুলাই আন্দোলনে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের অভিপ্রায় ছিল। তা কোনো তাৎক্ষণিক ক্ষোভ ছিল না। বহু বছরের রাজনৈতিক দমনপীড়ন, বৈষম্য আর লুটপাটের বিরুদ্ধে গণজাগরণ ছিল। “এক বছর পর আমরা যে বাস্তবতা দেখছি, তা গভীর উদ্বেগ ও রাজনৈতিক প্রতিফলনের দাবি রাখে। অন্তর্বর্তী সরকার, যার ওপর জনগণ সীমিত আস্থা রেখে সংবিধান, রাষ্ট্রকাঠামো এবং বিচারব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কারের প্রত্যাশা করেছিল, তারা সেই ঐতিহাসিক দায় পালনে ব্যর্থ হয়েছে।” সিনথিয়া বলেন, “রাষ্ট্রপুনর্গঠনের যে আলোচনা আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম, তা আজও শুরু হয়নি। প্রশাসনিক কাঠামো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচারব্যবস্থা কিংবা রাজনৈতিক সংস্কৃতির কোনো স্তরেই কাঠামোগত সংস্কারের ইঙ্গিত আমরা দেখতে পাচ্ছি না। “পরিবর্তনের জায়গায় পুনরুৎপাদিত হচ্ছে একই দুর্বিনীত ক্ষমতা, একই স্বজনপ্রীতি, একই গণবিচ্ছিন্নতা। জুলাই আন্দোলনের মূল প্রত্যাশাগুলো আজও অপূর্ণ এবং রাজনৈতিক কাঠামোর গভীরে কোনো প্রগতিশীল দাগ পড়েনি।” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, গত দেড় দশকে যারা জুলুম-নির্যাতনের সঙ্গে ছিলেন, তাদের বিচার এবং রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা ছিল। তবে আন্দোলনের এক বছর পরও এসব দৃশ্যমান নয়। এর ফলে জনগণের মধ্যে হতাশা দেখা দিচ্ছে। “ছয় মাসেই তা দৃশ্যমান হতে পারত। নির্বাচনের জন্য আকাঙ্ক্ষা ছিল। ১৫ বছর পরে যখন সময় পেলাম, তখন সেটা কমপ্লিট করার কথা ছিল। সেটাও দৃশ্যমান না। জবাবদিহিমূলক সরকারের দাবিও অধরা রয়ে গেল।” অধিকার কর্মী খুশী কবির বলেন, আন্দোলনের পর জনগণ যে ধরনের স্থিতিশীল পরিস্থিতি প্রত্যাশা করেছিল; সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি সরকার। “এখান থেকেই বিভক্তিটা আসছে— এই আন্দোলন তাহলে কীসের জন্য হল? মানুষ নিরাপত্তা চায়, ন্যূনতম চাহিদা মিটিয়ে ভালো মত খেয়ে পরে থাকতে চায়। অর্থনৈতিক অবস্থারও যখন পরিবর্তন আসছে না, নিরাপত্তাহীনতারও কোনো পরিবর্তন আসছে না- তখন তো মানুষ আরও হতাশ হয়।” তবে সবাই হতাশ নন। কেউ কেউ বর্তমানে ‘অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো’ দেখছেন। নিরাপত্তা, জিনিসপত্রের দাম সবই তাদের কাছে ‘স্বাভাবিক’। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিফাত হোসাইন বললেন, “অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বিডিআর হত্যাকা- ও শাপলা হত্যাকা-ের বিচার শুরু হইছে, যেখানে অনেকে অন্যায়ের শিকার হইছে। জিনিসপত্রের দাম কমছে, আগে অনেক বেশি দাম ছিল।” সরকার পতনের পর পুলিশের কার্যক্রমে এক ধরনের স্থবিরতা নামে। রাজনীতিতে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা হয়। হামলা হয় বিভিন্ন মাজারেও। নানা অভিযোগে দেশজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করানোর অভিযোগ ওঠে। আদালতে পুলিশের সামনে হামলা হয় আসামিদের ওপর। সম্প্রতি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদার গলাতেও জুতার মালা পরানো হয়। এসব ঘটনা ‘আগেও ছিল’ মন্তব্য করে সিফাত বলেন, “আমার জান এবং মালের নিরাপত্তা এখন রয়েছে, আমার এলাকা মিরপুরের নিরাপত্তা নষ্ট হয়নি।” মহাখালীর চা-দোকানি শান্ত আহমেদ রতন বলেন, “বর্তমানে কোনো উচ্ছৃঙ্খলা নেই, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো আছে। ফলে জনগণের পাশাপাশি দেশের অবস্থাও ভালো। “মব কেউ ইচ্ছা করে করতেছে, আগের হয়ত আক্রোশ ছিল। নরমালি আগের চেয়ে সবকিছুই ভালো আছে। কিছু কিছু ঘটনা তো আগে এর চেয়ে বেশি হইছে। আগে অনেক আতঙ্কে থাকতাম, কে কোন দিক দিয়ে কী বলে। “এমনও দেখা গেছে, আগে মাগরিবের নামাজের সময় দামি কেক কিংবা কফিটা নিচে নামায়ে রেখেছি, দোকান বন্ধ করে দিছি। এখন আমি রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখি। তার মানে আমি আগের চেয়ে নিরাপদ বোধ করি। গত ১০ বছর বাজার করে খাইতে আমার খুব কষ্ট হইছে, গত একবছরে সবকিছু আমি কমে কিনে ফেলছি।” বেসরকারি চাকরিজীবী মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন মনে করেন, সরকার দেশের সব ধরনের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছে। আর যতটুকু যা হচ্ছে, তা আন্দোলনের ফলেই সম্ভব হয়েছে। “আন্দোলন না হলে সরকার এগুলো করতে পারত না। বাজারদর থেকে শুরু করে এয়ারপোর্টের সার্ভিসিং, রাস্তাঘাটের ভিআইপি মুভমেন্ট, অনেককিছুই ফলপ্রসূ হচ্ছে। অনেকগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ হচ্ছে।” নরসিংদীর রিকশাচালক হাবিব মিয়া বলেন, “এখন নির্যাতন থেকে মানুষ বাঁচতেছে। আগে পুলিশের হুমকি ধামকি চলতেছিল। কথা বলতে পারতাম না। প্রশাসনের যা ইচ্ছা তাই করতে পারত। “এই চাপটা থেকে আমরা ভালো আছি। আমাদের এটা মুসলমান কান্ট্রি, আমি তো ইন্ডিয়ার সঙ্গে খাতির করতে পারি না। এগুলো বন্ধ হচ্ছে। পূর্ণ অধিকার আছে, মানুষের স্বাধীনতা আছে।“