টাকা হারিনয়ে দিশেহারা একটি পরিবার : জ্ঞানহারিয়ে হাসপাতারে ৩ জন

চুয়াডাঙ্গাসহ পাশ্ববর্তি এলাকায় ক্রমশ ভয়ানক হয়ে উঠেছে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা

আফজালুল হক: চুয়াডাঙ্গা ও পাশর্^বর্তী এলাকায় প্রতারকচক্র, অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির অপতৎপরতা ভয়াবহ আকারে বেড়েছে। গবাদিপশু কিনতে আসা লোকজনকে টার্গেট করে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা ঘুরছে বাসে সড়কে হাটে ঘাটে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কায়দায় মানুষের অর্থ লুটের পাশাপাশি অজ্ঞান করে মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর মুখে। কখনও ফেরিওয়ালা, কখনও বাদাম, চকলেট বিক্রেতা আবার কখনও যাত্রীবেশে থাকা প্রতারককের খপ্পরে পড়ে অনেকেই হারাচ্ছেন টাকাসহ মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী। গতকাল সোমবারেই চুয়াডাঙ্গায় ৩ জনকে অজ্ঞান করে প্রায় দেড় লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় প্রতারক চক্রের সদস্যরা। ইতোমধ্যে পুলিশ অজ্ঞানপার্টির সদস্যদের গ্রেফতার করলেও রাখব বোয়ালরা থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে। কষ্টের টাকা হারিয়ে যেমন কাদছে, ঠিক জীবন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন হাসপাতালের বিছানায়।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার খাদিমপুর ইউনিয়নের আলিহাটনগর গ্রামের মাঝেরপাড়ার মৃত ফাকের আলী মন্ডলের ছেলে আব্দুল মজিদ (৫০) ও একই এলাকার মৃত ইয়াকুব খন্দকারের ছেলে ওবাজ উদ্দিন খন্দকার (৬০)। সম্পর্কে তারা চাচা ভাতিজা। গতকাল সোমবার দুপুরে চাচা-ভাতিজা নিজ বাড়ি থেকে বাসযোগে ডুগডুগি পশুহাটে গরু কিনতে যায়। এসময় বাসের মধ্যে তারা দুজন অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়েন। পরে তাদের দুজনকে কৌশলে অচেতন করে মোবাইল ফোন না নিলেও তাদের কাছে থাকা ৭০ হাজার করে মোট ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। পরে বাসের হেলপাররা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাদের দুজনকে দর্শনা বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয় এবং তাদের নিকটে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিবারকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে আসে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অপরদিকে, আলমডাঙ্গা উপজেলার খুদিয়াখালি গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে এনামুল হক (৩০) পূর্বাশা পরিবহনে ঢাকায় যাওয়ার পথে অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়েছে। তাকে উদ্ধার করে গতকাল সোমবার সন্ধার পর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা জানায়, এনামুল হক নারায়নগঞ্জ জেলায় আজিক গ্রুপে গাড়ি চালক হিসেবে কর্মরত। গতকাল সকালে পূর্বাশা পরিবহনে ঢাকায় যায়। পরে দুপুরে একটি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের মাধ্যমে বাড়িতে আসে। এরপর থেকে সে অচেতন। তিনি অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়েছেন বলে দাবি পরিবারের। তবে অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়ে কত টাকা খুয়েছেন এ ব্যাপারে প্রতিবেদকের নিকট স্পর্ষ্ট কোন বক্তব্য পাওয়া দেয়নি তার পরিবারের সদস্যরা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিতসক বলেন, পৃথক তিন পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি তারা অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়েছেন। তিনজনেরই পাকস্থলি ওয়াশ করা হয়েছে। তারা সকলেই অচেতন রয়েছেন। প্রাথমিক চিকিতসা দিয়ে ভর্তি করে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে অজ্ঞানপার্টির একজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছি। এই চক্রকে ধরতে ইতিমধ্যে পুলিশ মাঠে নেমেছে। একটু সচেয়তন হলেই এঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভয়। এদের মধ্যে অসেতনতার অভাব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Comments (0)
Add Comment